জাতীয়

বিএনপির এমপি সিরাজের তিন রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির মামলা

বিএনপির সাংসদ জিএম সিরাজের মালিকানাধীন এসআর গ্রুপের ৩ রেস্টুরেন্ট ৩২ কোটি ২৫ লাখ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপন করায় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির পৃথক মামলা দায়ের করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর। এর মাধ্যমে এসআর গ্রুপের ৩ রেস্টুরেন্ট ৭ কোটি ১৩ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যায় নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের (মূল্য সংযোজন কর) মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

মইনুল খান বলেন, ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া এসআর গ্রুপের এই ৩ রেস্টুরেন্ট হচ্ছে- রাজধনীর বিজয় নগরে সুং ফুড গার্ডেন, ধানমন্ডির গার্লিক এন জিঞ্জার ও যমুনা ফিউচার পার্কে গার্লিক এন জিঞ্জার।

এর আগে একই গ্রুপের ফুড ভিলেজ ও ফুড ভিলেজ প্লাস নামক ২টি হাইওয়ে রেস্টুরেন্টের ২০০ কোটি টাকার বিক্রির তথ্য গোপন ও এর বিপরীতে ২৬ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটন হয়েছিল। দি গ্রেট কাবাব ফ্যাক্টরির রাজধানীর গুলশান-২, যমুনা ফিউচার পার্ক ও ধানমন্ডি এলাকায় ৩ অভিজাত রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধেও প্রায় ১৫ কোটি টাকার গোপন বিক্রির তথ্য উদ্ঘাটন করা হয়। এতে ওই ব্যবসায়ী গ্রুপটির বিরুদ্ধে ৩ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির মামলা হয়।

আরও বলেন, ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ১৪ সেপ্টেম্বর ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল রাজধানীর নিকুঞ্জ-১ এর ৪৬ নম্বরের লেকড্রাইভের বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানে ভ্যাট গোয়েন্দার উপপরিচালক নাজমুন নাহার কায়সার ও ফেরদৌসী মাহবুব নেতৃত্ব দেন। এতে এসআর গ্রুপের মালিকানাধীন এই ৩টিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত ও গোপন করা বিক্রয় তথ্য পাওয়া যায়। দীর্ঘ অনুসন্ধানশেষে আজ এই ৩টি রেস্টুরেন্টের ফাঁকির হিসাব চূড়ান্ত ও সেই সূত্রে ভ্যাট আইনে পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করা হয়।

অনুসন্ধান অনুযায়ি, সুং ফুড গার্ডেনের (বিআইএন-০০১৩১৬২৯৭-০২০৮) দাখিল পত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ৬ কোটি ৩৪ লাখ। কিন্তু অভিযানে জব্দ করা কাগজপত্র থেকে প্রাপ্ত প্রকৃত মূসক আরোপযোগ্য বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ২১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এখানে ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ২ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদ বর্তায় ১ কোটি ২ লাখ টাকা।

গার্লিক এন জিঞ্জারের (বিআইএন-০০২১২৮৮৬২-০১০১) দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। কিন্তু জব্দ করা তথ্যে দেখা যায়, তাদের প্রকৃত মূসক আরোপযোগ্য বিক্রয়মূল্য ১৫ কোটি ৭ লাখ। এখানে ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ১ কোটি ৮৩  লাখ টাকা। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদ ৯০ লাখ টাকা আদায়যোগ্য হয়েছে।

অন্যদিক, গার্লিক এন জিঞ্জারের (বিআইএন-০০১২১৫৮৮৩-০২০১) দাখিলপত্রে বিক্রয় ঘোষণা দিয়েছে ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এর প্রকৃত ভ্যাট আরোপযোগ্য বিক্রয়মূল্য ৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এখানেও ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ৭৯ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় একইভাবে মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদ আরোপযোগ্য ২৫ লাখ ৯১ হাজার টাকা।

মামলাগুলো নিষ্পত্তির জন্যে ওই ৩ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গার্লিক এন জিন্জার ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেট এবং বাকি দুটো ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেটে পাঠানো হবে।

এই ৩টিসহ এই পর্যন্ত মামলা দায়ের করা অন্যান্য ৮টি রেস্টুরেন্টে বিক্রির তথ্য গোপন পাওয়া গেছে ২৪৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এতে ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ৩৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button