জাতীয়

সম্পর্ক জোরদারে ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিবের আকস্মিক ঢাকা সফর

আকস্মিক সফরে ঢাকায় এসেছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই বার্তা আনেন যে, ঢাকার সঙ্গে দিল্লির বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে এই সম্পর্ক চলমান থাকবে।

শ্রিংলা মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় আসার পর সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা করোনা মহামারি পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাশ মঙ্গলবার রাতে হোটেল সোনারগাঁওয়ে সংক্ষিপ্ত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ ও বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। সেই কারণে মহামারির মধ্যেই এই বার্তা নিয়ে পররাষ্ট্রসচিব অনানুষ্ঠানিক সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন।”

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বার্তা নিয়ে একজন শীর্ষ কর্মকর্তার ঢাকায় আসায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনন্দিত হয়েছেন বলেও ভারতীয় কর্মকর্তারা জানান।

শ্রিংলা ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকায় আসেন। তিনি গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। যদিও তাদের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল দুপুর ৩টায়। তাদের বৈঠক এক ঘণ্টা স্থায়ী হয়।

এর আগে ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছিল, শেখ হাসিনার কাছে নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত বার্তা নিয়ে যাচ্ছেন শ্রিংলা।

শ্রিংলার ঢাকায় আসার অল্প সময় আগে আনুষ্ঠানিকভাবে তার সফর সম্পর্কে ঘোষণা দেওয়া হয়। কূটনৈতিক সূত্র মতে, বাংলাদেশে চীনের প্রভাব বিস্তারে নতুন দিল্লির উদ্বেগের মধ্যে ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিবের এই সফর অনুষ্ঠিত হলো।

এটি পররাষ্ট্রসচিব ও বাংলাদেশে সাবেক হাইকমিশনার শ্রিংলার অনানুষ্ঠানিক সফর ছিল। গত জানুয়ারিতে পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে যোগ দেওয়ার পর তিনি মার্চের প্রথম দিকে ঢাকায় এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদির নির্ধারিত ঢাকা সফরকে সামনে রেখে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মোদির ঢাকায় আসার কথা ছিল। করোনা মহামারির কারণে মোদি সেই অনুষ্ঠানে আসতে পারেননি।

মঙ্গলবার ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের এক সংক্ষিপ্ত বার্তায় বলা হয়, শ্রিংলা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সহযোগিতা এগিয়ে নিতে আলোচনা করবেন।

গত মার্চের মাঝামাঝি করোনা মহামারি শুরুর পর এই প্রথম কোনো উচ্চপর্যায়ের ভারতীয় কর্মকর্তা ঢাকা সফরে এলেন।

ভারতীয় হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘ-মেয়াদী সম্পর্কের বিষয়ে ভারত একটি রোডম্যাপ খুঁজছে।

করোনা-পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে যোগাযোগ, ভ্যাকসিকসহ অন্যান্য বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা, মুজিববর্ষ উদযাপন, আগামী বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

মঙ্গলবার ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দু’র প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে তিস্তা নদীকে কেন্দ্র করে সেচ প্রকল্পে চীনের প্রায় ১০০ কোটি ডলার সহযোগিতার সম্ভাবনার প্রেক্ষাপটে শ্রিংলার এই সফর। বাংলাদেশ-ভারত আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন ইস্যু।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button