জাতীয়

৩ মাস ধরে জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ নৌ-রুটে বন্ধ ফেরি চলাচল, ভোগান্তি চরমে

রাজবাড়ী: গত তিন মাস ধরে উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ নৌ-রুট রাজবাড়ীর সাথে পাবনার সহজতম যোগাযোগ মাধ্যম ধাওয়াপাড়ার জৌকুড়া ও পাবনার নাজিরগঞ্জ রুটে নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে প্রায় ১০টি জেলার সহজতম এ নৌ-রুট দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পদ্মার পানি কমে জৌকুড়া ফেরি ঘাট বর্তমানে দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার দুরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ফেরি পারের আশায় সাধারন যাত্রীরা দীর্ঘ চরাঞ্চলের এ পথ হেঁটে ও ঘোড়ার গাড়িতে ফেরি ঘাটে এলেও ফেরি বন্ধ থাকায় ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চ ও ট্রলারে বাধ্য হচ্ছেন নদী পার হতে। তবে নদীতে ফেরি চলাচলে পর্যাপ্ত পানির ড্রাফট (পানির গভিরতা) না থাকায় ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুম ব্যাতিত ফেরি চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করেন এলাকাবাসি।
পদ্মার পানি দ্রুত কমে যাওয়ার গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে জৌকুড়া নাজির গঞ্জ নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছে এ ফেরিঘাটের তত্বাবধানে থাকা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জের ফেরি ঘাট মেরামত ও ঘাট স্থানান্তরের কাজ করা হলেও নাব্য সংকট ও আড়াই কিলোমিটার ধুধু বালু চড়ের কারনে এখনও কোনো রাস্তা তৈরী করা সম্ভব হয়নি। একারনে এ পথের যাতায়াতকারী ১০ জেলার রাজবাড়ী, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, মাগুড়া-পাবনা,সিরাজগঞ্জ,বগুড়া সহ অন্যান্য অঞ্চলের মানুষ সংক্ষিপ্ত এ নৌ-রুট দিয়ে পার হলেও বর্তমানে ফেরি বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তি ও দুর্ভোগে পরছেন এ মানুষ গুলো।
এ-রুটে তিন মাস ফেরি চলাচল বন্ধের কারনে প্রতিদিনই নানা ধরনের সমস্যা পড়ছেন এ রুট ব্যবহারকারী ও এ অঞ্চলের ব্যাবসায়ীরা। প্রতিদিন এরুট দিয়ে দুইটি ইউটিলিটি (ছোট) ফেরির মাধ্যমে যাত্রীবাহি বাস,মাইক্রোবাস, ট্রাক ও ব্যাক্তিগত প্রাইভেটকার ,মোটর সাইকেল সহ বিভিন্ন পরিবহন পরাপার করা হয়ে থাক। তবে ফেরি বন্ধের কারণে ফিটনেস বিহীন ভাংগাচোড়া দুই তিনটি লঞ্চ ও কয়েকটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার চলাচল করছে যাত্রী পারাপারে। তবে বৈরী বাতাস ও নাাব্য সংকটে মাঝে মাঝে এসব নৌ-যানে পার হতে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন যাত্রীরা।
জৌকুড়া ফেরি গ্রীজার ও চালক,মোঃ ইয়াছিন মোল্লা জানান, প্রায় তিন মাস ধরে নদীর পানি কমে যাওয়ায় এবং নদীর বিভিন্ন অংশে নাব্য সংকটে চড় জেগে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফেরি ঘাটের কাজ চলমান রয়েছে। তবে চড় জেগে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলের কোন সড়ক এখনও তৈরী করা সম্ভব হয়নি। আগামী বর্ষা মৌসুম চৈত্র বা বৈশাখের আগে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভবনা নেই। পানি বাড়লে ফেরি চলাচল শুরু করা হবে। তবে এ পথের যাত্রীরা ফেরি পার হতে না পেরে অনেক ভোগান্তির মধ্যে লঞ্চ ও নৌকায় নদী পার হচ্ছে।
রাজবাড়ীর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কে বি এম সাদ্দাম হোসেন জানান, সড়ক বিভাগ বলছে নাব্যতা সংকটে গত তিন মাস ধরে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। নদীর বিভিন্ন স্থানে ডুবোচড় দেখা দিয়েছে। এতে ফেরি চলাচলে যে পরিমাণ পানি থাকার প্রয়োজন নদীতে নাব্য সংকটে সে পরিমাণ পানি না থাকায় ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছেন। তবে ফেরি ঘাট মেরামত ও ঘাট স্থানান্তরের কাজ চলমান রয়েছে। এখনও ফেরি ঘাটে যানবাহন আসতে কোন সড়ক নির্মান করা হয়নি। তবে কয়েকদিনের মধ্যেই রাজবাড়ীর জৌকুড়া ও পাবনার নাজিরগঞ্জ রুটে ফেরি চলাচল শুরু স্বভাবিক হবে এবং ভোগান্তি কমবে যাতায়াত কারী যাত্রী ও চালকদের। পদ্মার পানি কমে যাওয়ায় নদীতে নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। তবে ঘাট স্থানান্তর ও এরুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হলে যাত্রী ও চালকদের ভোগান্তি কমবে রাজবাড়ী থেকে পাবনা সহ ১০ জেলার মানুষের যাতায়াতে। দু’একদিনের মধ্যে ফেরি ঘাট এলাকা পরিদর্শন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর রাজবাড়ী কর্তৃপক্ষ। ঘাটের সার্বিক বিষয়ে ফরিদপুর সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button