রাজশাহী বিভাগসারাদেশ

বগুড়ার শেরপুরে এক প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণের শিকার

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুরে এক প্রতিবন্ধী কিশোরী (১৪) ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আর এই ঘটনাটি ঘটে উপজেলার খানপুর ইউনিয়নে খানপুর দহপাড়া এলাকায়। পরে ধর্ষককে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে মাঠে নামেন গ্রাম্য মাতব্বররা। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ওই গ্রামে সালিশি বৈঠকের আয়োজন করেন তারা। এমনকি সেই বৈঠকে ধর্ষণের শিকার প্রতিবন্ধী ওই কিশোরীর নামে তার ইজ্জতের মূল্য হিসেবে ষোল শতক জমি লিখে দেয়ার শর্তে আপোষ-রফাও করা হয়। কিন্তু ঘটনাটি প্রকাশ হয়ে পড়লে তাদের সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়ে যাওয়ায় শেষমেষ শেরপুর থানায় একটি মামলা করা হয়। ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর বাবা শফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে গত বৃহস্পতিবার (০৬আগস্ট) রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি করেন। এরপর উক্ত ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযানে নামে পুলিশ। তবে পুলিশের উপস্থিতি আঁচ করতে পেরে লম্পট ধর্ষক পালিয়ে গেলেও ধর্ষণ ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগে তিন গ্রাম্য মাতব্বরকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- ওই গ্রামের লোকমান হোসেন (৫০), আব্দুল লতিফ (৪৫) ও প্লাবন সরকার (৩৫)।
শেরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলহাজ¦ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গত ০৫আগস্ট বিকেলে উপজেলার খানপুর দহপাড়া গ্রামের সোলায়মান আলীর ছেলে লম্পট ঈমান আলী (৪০) একই গ্রামের শফিকুল ইসলামের প্রতিবন্ধী কিশোরী মেয়েকে কৌশলে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। এসময় বাড়িতে কেউ ছিলেন না। আর এই সুযোগে নানা প্রলোভন দিয়ে তাকে ধর্ষণ করে লম্পট ঈমান আলী। একপর্যায়ে ওই কিশোরীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে গ্রাম্য মাতব্বররা ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে মাঠে নামেন। এমনকি ধর্ষককে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেন। এরই ধারাবাহিকতায় গ্রাম্য সালিশি বৈঠক বসানো হয় এবং জমি লিখে দেয়ার শর্তে আপোষ-রফার মাধ্যমে ঘটনাটি ধামাচাপা দেন তারা। এ কারণে ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবার গ্রাম্য মাতব্বরদের ভয়ে ধর্ষকের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিতে থানায় আসার সাহস পাননি। তবে ঘটনাটি জানতে পেরে তাদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়া হয়েছে।
শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মিজানুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, উক্ত ঘটনায় লম্পট ঈমান আলীসহ নয়জনকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি মামলা নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে তিন গ্রাম্য মাতব্বরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া এই ঘটনার মূলনায়কসহ বাকি অন্যান্য অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও দাবি করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button