এখনো সঞ্চয়পত্রের সুদহার বেশি:অর্থমন্ত্রী
যেসব রেট বাজারে প্রভাব রাখে সেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো হয়েছে। এখনো সারা দেশে যে ডিপোজিট ইন্টারেস্ট রেট আছে সে তুলনায় সঞ্চয়পত্রের ইন্টারেস্ট রেট বেশি। তবে মুনাফার হার যেটুকু কমানো হয়েছে তাতে প্রান্তিক বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
গতকাল বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিকসংক্রান্ত এবং সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি ই-কমার্স খাতে প্রতারণার দায় সরকার এড়াতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন।
সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমানোর কারণ কী—এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘যে সমস্ত রেট বাজারে প্রভাব রাখে সেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই সুদের হার কমানো হয়েছে। আমরা রেটটি রেখেছিলাম যারা পেনশনার আছে এবং যারা প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তাদের জন্য। কিন্তু আমরা লক্ষ করলাম, এখানে তুলনামূলক সুদহার একটু বেশি। ফলে সবাই এখানে চলে আসছে। এতে আমাদের অর্থনীতির অন্য চালিকাশক্তিগুলো অচল হয়ে যাচ্ছে। এখানে সুদহার কমানোর কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও ক্ষুদ্র ডিপোজিট যারা রাখে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘১-২ শতাংশ যে সুদের হার কমানো হয়েছে সেখানে প্রান্তিক বিনিয়োগকারীদের কথা মাথায় রেখে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ডিপোজিটে সুদের হার কমানো হয়নি। এর ওপরে যারা আছে তাদের জন্য কমানো হয়েছে। এখনো সারা দেশে যে ডিপোজিট ইন্টারেস্ট রেট আছে সে তুলনায় সঞ্চয়পত্রের ইন্টারেস্ট রেট বেশি।’
সরকার সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহ করছে কি না, জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নিরুৎসাহ করবে কেন? যাদের জন্য সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ উৎসাহিত করা দরকার তাদের উৎসাহিত করতে চাই। এখন যদি এক-দেড় কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র কেউ নিয়ে আসে, সেটা আমরা কি গ্রহণ করব? এটা তো আমরা চাইনি। আমরা চেয়েছি এক লাখ, দুই লাখ, পাঁচ লাখ, ১৫ লাখ, ২৫ লাখ, ৩০ লাখ টাকার ক্ষুদ্র ডিপোজিট যাতে রাখে। আবার যদি বলেন ক্ষুদ্র ডিপোজিট বেশি রাখেন, সেটাও মানি আমরা। তবে এতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রান্তিক বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ দেখেছি। ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আমরা কোনো হাত দিইনি। মুনাফার হার বাড়ানো-কমানো একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটা কখনো বাড়বে, কখনো কমবে। প্রয়োজনে আবার বাড়তেও পারে।’
ই-কমার্সে প্রতারণা নিয়ে সবার সমন্বিত উদ্যোগ থাকবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে মূলত কাজটি আমাদের অর্থ মন্ত্রণালয়ের। এখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকা আছে। উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচয় নিয়ে তারা আসে। আইটির বিষয় আছে, সেখানে আইসিটি মন্ত্রণালয় আছে, তারাও দায়িত্ব নেবে এসব প্রতিষ্ঠানকে জানার জন্য। মাঝেমধ্যে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান তৈরি করে মানুষকে ঠকায়। এটা কিন্তু চলে আসছে। আগে যেভাবে হতো, এখন হয়তো ভিন্ন আঙ্গিকে আসছে। আগে ম্যানুয়ালি করত, এখন ইলেকট্রিক্যালি করছে। ডিজিটাইজড ওয়েতে করা হচ্ছে। কত দিকে নিয়ন্ত্রণ করবে? নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে অবশ্যই। সরকারই দায়িত্ব নেবে। সরকার দায়িত্ব এড়াবে কেন?’