শিক্ষাঙ্গন

জাককানইবিতে তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব

ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলোর আয়োজনে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব-২০১৯ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৫-১৭ অক্টোবর প্রতিদিন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুদ্বীপের বটতলায় বসছে লালনের গানের আসর।

কেবল গানের আসর হিসেবে নয়, বটগাছ ও পুকুর রক্ষার চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে লালন স্মরণোৎসব-২০১৯ কে সাংস্কৃতিক পরিবেশ ধ্বংসের বিরুদ্ধে ঘোষণা দিয়েছে আয়োজকরা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গান পরিবেশনার সঙ্গে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব বক্তব্য দিয়েছে। গ্রিন ক্যাম্পাস, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, বারামখানা, উদীচীসহ বিভিন্ন ত্রিয়াশীল সংগঠন একাত্মতা জানিয়েছে।

উৎসবের দ্বিতীয় দিন বুধবার (১৬ অক্টোবর) অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দ্রাবিড় সৈকত। তিনি বটতলার তাৎপর্য তুলে ধরে পুকুর ও শতবর্ষী গাছ রক্ষায় প্রশাসনকে তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে প্রাণ প্রকৃতি রক্ষা করে উন্নয়ন কাজ পরিচালনার আহ্বান জানান।

ফোকলোর বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গম্পকার মেহেদী উল্লাহ্‌ বলেন, যারা দুই দিনের জন্যে আসেন বা বহিরাগত তাদের সম্পর্কে কিছু বলব না, তারা এই জায়গার ইতিহাস জানে না। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ঠিক রেখে ভবন নির্মাণ হোক।

চারুকলা প্রভাষক মঞ্জুর এলাহি বলেন, লিফট কিনতে ইউরোপ যেতে পারলে পরিবেশ ঠিক রেখে কীভাবে কাজ করতে হয় তা জানতে সিঙ্গাপুর থেকে ঘুরে আসুন।

ছোটপর্দার পরিচিত মুখ ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক মনোজ কুমার প্রামাণিক বলেন, প্রত্যেক জায়গার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকে, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বটগাছ ও পুকুর তেমন। এমন অনেক জায়গা আছে গাছ বাঁচাতে পরিকল্পনা পরিবর্তন করে রাস্তা নির্মান করে। শিক্ষার্থীদের দাবিতে আমি একমত।

নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মেহেদি তানজির বলেন, আজকের উপস্থিতিই পারে সব কিছুর আওয়াজ দিতে। এই বার্তাই পারে শিক্ষার্থীদের দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করতে।

অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- অধ্যাপক ড. মো. মাহবুব হোসেন, অধ্যাপক ড. জাহিদুল কবীর, সাকার মুস্তাফা প্রমুখ।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১০ তলা অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্যে যে জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছিল সেখানে বটগাছ ও পুকুর রয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বটগাছ ও পুকুরের বেশির ভাগ অংশ ঠিক রেখে কাজ করার ঘোষণা দিয়ে প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। আন্দোলনকারীরা পুরো পুকুর রক্ষা চান। তাদের দাবি অনুযায়ী প্রশাসনের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে আট শতাধিক ফলজ ও ঔষধি গাছ কর্তন করতে হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button