শিক্ষাঙ্গন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: প্যানেলের এক মাস পরও নতুন ভিসি নিয়োগ হয়নি

প্যানেল নির্বাচনের এক মাস পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ হয়নি। ৩১ জুলাই সিনেট সদস্যদের ভোটাভুটিতে তিন সদস্যের প্যানেল গঠন করা হয়।

এরপর তা পাঠানো হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। সাধারণত চ্যান্সেলর হিসেবে রাষ্ট্রপতি প্যানেল থেকে একজনকে ভিসি নিয়োগ দিয়ে থাকেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, সিনেটের প্রস্তাবের ওপর সিদ্ধান্ত গ্রহণের কাজটি প্রক্রিয়াধীন আছে।

সাধারণত ভিসির পদে কেউ না থাকলে দ্রুত নিয়োগ দেয়ার বিষয় থাকে। যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি পদে একজন দায়িত্বরত আছেন, তাই তাড়াহুড়া করা হচ্ছে না। শিগগিরই সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

২৬ বছরের অচলায়তন ভেঙে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ সিনেট নির্বাচন করেছে তিন সদস্যের ভিসি প্যানেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির ডাকা সিনেটের এই বিশেষ অধিবেশনে ১০৫ সদস্যের মধ্যে ৯৩ জন যোগদান করেন। এর আগে সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে সিনেট পূর্ণাঙ্গ ছিল।

নির্বাচিত তিন শিক্ষক হলেন- বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান (ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ), প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ (সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট) এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল (দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ)।

তিনজনই আওয়ামী লীগ সমর্থিত নীল দলের মাধ্যমে মনোনয়ন পেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশের ১১(১) ধারা অনুযায়ী সিনেট এই প্যানেল নির্বাচন করে। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, তিন সদস্যের এই প্যানেল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী ভিসি মনোনয়ন দেবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতি।

দীর্ঘ সময় পর পূর্ণাঙ্গ সিনেট ভিসি প্যানেল নির্বাচন করায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের উচ্ছ্বাস কাজ করছে। তারা বলছেন, এর মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক চর্চার ধারা পূর্ণরূপে আবার ফিরে এল।

তবে এক মাস পরও নতুন ভিসি না পাওয়ায় গুঞ্জন উঠেছে প্যানেলের বাইরে থেকে কাউকে ভিসি মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, প্যানেলের বাইরের কেউ ভিসি হলে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক সৌন্দর্য নষ্ট করবে।

নতুন ভিসি মনোনয়নের বিষয়ে ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান  বলেন, এটি সরকারসংশ্লিষ্ট যারা আছেন তাদের সিদ্ধান্ত, সরকার এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত।

প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যা কিছু মঙ্গলজনক হবে সরকার সেই সিদ্ধান্তই নেবে বলে আমার বিশ্বাস।

নীল দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ড. হুমায়ুন কবির বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আইন, বিধি ও ট্রাডিশন অনুযায়ী চালানোর জন্য প্যানেল থেকে ভিসি দিলেই তা মঙ্গলজনক হবে। ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হোক এটা আমাদের প্রত্যাশা।

অধ্যাদেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা অনুযায়ী প্যানেলের বাইরে থেকে দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ১১(২) ধারা অনুযায়ী প্যানেলের বাইরে থেকে ভিসি করার যে কারণগুলো রয়েছে, যেমন ছুটিজনিত ও অসুস্থতাজনিত, তার একটিও এখন বিদ্যমান নয়।

ডাকসু ভিপি নূরুল হক নূর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে প্যানেল থেকেই পরবর্তী ভিসি হতে হবে। সেটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে করা উচিত।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button