আন্তর্জাতিকবিনোদন

মৃত্যুর আগে ডায়ানা যা বলেছিলেন

দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গাড়িটির পেছনের সিটে বসা ছিলেন ‘সাদা চুলের সেই নারী।’ প্যারিস টানেলে ঘটা দুর্ঘটনার পর দৌড়ে সেখানে যান উদ্ধারকর্মী জাভিয়ের গুরমল। তিনি সেই নারীকে গাড়ি থেকে বের করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাঁর বিন্দুমাত্র ধারণা ছিল না ‘সাদা চুলের সেই নারী’র নাম প্রিন্সেস ডায়ানা।

প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর অ্যাম্বুলেন্সে তোলার পর তিনি জানতে পারেন ওই নারীর নাম ডায়ানা। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম ‘মিরর’ ডায়ানাকে নিয়ে প্রতিবেদনটি করে।

আজ ৩১ আগস্ট। প্রিন্সেস ডায়ানার ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী। প্যারিসে এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন ডায়ানা। তখন তাঁর বয়স মাত্র ৩৬ বছর। তাঁর সঙ্গে নিহত হন তাঁর প্রেমিক দোদি আল ফায়েদ।

ডায়ানার শেষ মুহূর্তটুকুর সাক্ষী ফরাসি জাভিয়ের গুরমল। তিনি যখন দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গাড়িটির ভেতরে থাকা ডায়ানাকে দেখেন তখনো তাঁর বিন্দুমাত্র বিশ্বাস হয়নি যে তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। গুরমল জানান, ডায়ানার জ্ঞান ছিল, তাঁর চোখও ছিল খোলা।

গাড়ি থেকে বের করে আনার পর ডায়ানাকে অক্সিজেন দেন গুরমল। ডায়ানার হাতটি ধরে রেখেছিলেন তিনি। গুরমল তাঁকে ভরসা দিচ্ছিলেন আর বলছিলেন, ‘আপনি শান্ত থাকুন।’

ডায়ানা তখন কথা বলেন। তিনি গুরমলকে বলেন, ‘হে ঈশ্বর! কী হয়েছে?’

গুরমল জানান, ডায়ানা রক্তাক্ত ছিলেন না। ডান কাঁধে একটা হালকা আঘাত দেখতে পান তিনি। তাঁর মনে হচ্ছিল তেমন গুরুতর কিছু ঘটেনি ডায়ানার। ঠিক তখনই হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। গুরমল বলেন, ‘আমি হার্ট লক্ষ্য করে মেসেজ করতে থাকি। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি শ্বাস নিতে শুরু করেন। আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। কারণ প্রথম উদ্ধারকারী হিসেবে আমার কাজ জীবন বাঁচানো। আর আমি তা করতে পেরেছিলাম।’

গুরমল বলেন, ‘বিশ্বাস করুন, আমি ভেবেছিলাম তিনি (ডায়ানা) বেঁচে যাবেন। আমি যত দূর জানি অ্যাম্বুলেন্সে করে নেওয়ার সময় তিনি বেঁচেছিলেন। হাসপাতালে তিনি মারা যান। এ ঘটনা শুনে আমি হতাশ হয়ে পড়ি।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি পরে তিনি শরীরের ভেতর বেশি আঘাত পেয়েছেন। সেদিনের সেই রাতের কথা আমি কখনো ভুলব না। এখনো স্পষ্ট মনে আছে।

জাভিয়ের গুরমল বলেন, ‘ইনি প্রিন্সেস ডায়ানা, এটা আমি জানতাম না। অ্যাম্বুলেন্সে তোলার পর আমাকে বলা হয় তিনি ডায়ানা।

যখন আবারও শ্বাস নিতে থাকেন ডায়ানা। তখন গুরমল আর দলকে ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন। সবার ধারণা হয়েছিল হাসপাতালে নিলেই সেরে উঠবেন তিনি। কিন্তু সারা বিশ্বকে কাঁদিয়ে বিদায় নেন তিনি।

১৯৬১ সালের ১ জুলাই জন্ম নেন ডায়ানা। ১৯৮১ সালে যুক্তরাজ্যের যুবরাজ চার্লসের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। ১৯৯৬ সালে চার্লসের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় তাঁর। তবে ডায়ানার খ্যাতি ছিল বিশ্বজুড়ে। ফ্যাশন, সৌন্দর্য ও বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজের জন্য তিনি তাঁর সময়ের অধিকাংশ মানুষের প্রিয় ছিলেন। ভূমি মাইনের বিরুদ্ধে তাঁর আন্দোলন ছিল আলোচিত। ডায়ানার মৃত্যুর সময় তাঁর বড় ছেলে উইলিয়ামের বয়স ছিল ১৫, হ্যারির বয়স ছিল ১২ বছর।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button