স্বাস্থ্য

অস্টিওপোরোসিস বা হাঁটু ব্যথা ঠেকাতে কিছু নিয়ম

বেশিরভাগ অস্থিবিশেষজ্ঞই হাঁটুর অসুখের জন্য ভুল জীবনযাত্রাকে মূল কারণ বলে চিহ্নিত করেন।তাদের মতে, জীবনযাপনের ক্ষেত্রে অনেকগুলো ভুল যোগ হয়েই অস্টিওপোরোসিস জন্ম নেয়। প্রধাণত, বেশি ওজন ও হাঁটাচলা কম করার অভ্যাস তো রয়েছেই, মেয়েদের বেলায় যোগ হয় মেনোপজের পর থেকেই হাড়ের যত্ন নিতে শুরু না করার অভ্যাসও। অনেকেই হয়তো কায়িক পরিশ্রম করেন, কিন্তু সেভাবে ব্যায়াম করেন না। আবার কেউ হয়তো ভুল ব্যায়াম করে ডেকে আনছেন অকালে হাড় ক্ষয়ে যাওয়া বা অস্টিওপোরোসিস।

এছাড়াও, দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় একই ভঙ্গিতে বসে কাজ, ঘরের কাজে শ্রম কমাতে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার, হেঁটে যাওয়ার বদলে কথায় কথায় ক্যাব বুক করে ফেলার প্রবণতা, নিয়মিত শরীরচর্চা না করাও হাঁটুর ব্যথা তৈরি হওয়ার কারণ।

আবার অনেকে ওজন কমানোর নেশায় অনেক সময়ই অস্বাস্থ্যকর ডায়েট বা সোশ্যাল সাইট থেকে ডায়েট দেখে তা মেনে চলছে। ফলে ওজন কমলেও ভিতর থেকে দুর্বল হচ্ছে হাড়। তবে, অনেক সময় জিনগত কারণও অস্টিওপোরোসিসের জন্য দায়ী।

কেমন ডায়েট?
খাওয়া-দাওয়া: অনেকেরই ধারণা, হাড়ের জন্য কিছু বাজারচলতি ক্যালশিয়াম খেলেই হাড়ের অনেকটা যত্ন নেওয়া হয়ে যায়। আদতে তা নয়। বরং ওষুধ খেয়ে ক্যালশিয়াম বাড়ানোর চেয়ে খাবারের তালিকায় মন দেওয়াই বেশি প্রয়োজনীয়। ক্যালশিয়ামের ওষুধ দীর্ঘ দিন খেলে কিডনিতে অতিরিক্ত ক্যালশিয়াম গিয়ে মজুত হয়, তাই তা জমে পাথরও হতে পারে। তাই ওষুধে ভরসা না করে খাবারদাবারে আস্থা রাখাই ভাল।

হাড় সুস্থ রাখতে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, বোরন, ম্যাগনেশিয়াম, স্ট্রনটিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

সাধারণত, দুগ্ধজাত দ্রব্য থেকে শরীর অনেকটা ক্যালশিয়াম পায়। তাই দুধ, চিজ, ছানা, মাখন, দই রাখুন ডায়েটে। ল্যাকটোজেনে সমস্যা থাকলে সরাসরি দুধ না খেয়ে ছানা, চিজ এসব খান। এ ছাড়াও বিভিন্ন ফল ও শাক-সবজি, তেলযুক্ত সামুদ্রিক মাছে ভিটামিন ডি থাকায় সেসবও রাখতে হবে পাতে।

শরীরচর্চা: পেশির শক্তি বাড়ে এমন কিছু ব্যায়াম এ ক্ষেত্রে খুব উপযুক্ত। হাঁটুর সমস্যা ইতিমধ্যেই শুরু না হলে দৌড়, হাঁটাহাঁটি, স্কিপিংয়ের মতো শরীরচর্চা রোজই করতে হবে। সাঁতার বা নাচ দুই-ই ভাল ব্যায়াম। কিন্তু ইতিমধ্যেই হাঁটু ব্যথা হতে শুরু করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই তার বেছে দেওয়া কিছু ব্যায়াম প্রতিদিন অভ্যাস করুন।

দৈনন্দিন জীবনে কিছু বিধি-নিষেধ মানলেই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হাঁটু প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন পড়ে না, অস্টিওপোরোসিসের প্রকোপও কমে।

কী সেই বিধি-নিষেধ?

ডায়েট, শরীরচর্চার পাশাপাশি এক জায়গায় দীর্ঘক্ষণ বসে না থাকা।
মাঝে মাঝেই উঠে হেঁটে আসা বা সহজ কিছু স্ট্রেচিং করে নেওয়া।
খুব উঁচু হিল না পরা।
হাঁটুর সমস্যা থাকলে দাঁড়িয়ে রান্না না করে টুলে বসে রান্না করা, বা রান্নার মাঝে মাঝেই এসে চেয়ারে বসে পড়া জরুরি ।
দাঁড়িয়ে স্নান করাও চলবে না।
লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করুন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button