স্বাস্থ্য

জরায়ুর সিস্ট নিয়ে চিন্তিত?

নারীদের জন্য ওভারিয়ান সিস্ট খুব স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। এর মধ্যে বেশিরভাগ সিস্টই নিজ থেকে একটা সময়ের পর চলে যায়। তবে, কিছু আবার যায়ও না। একটা সময় সিস্ট থেকেই অনেক বড় রকমের সমস্যা তৈরি হতে পারে।

সাধারণত, সিস্ট হচ্ছে পানিভর্তি একটি অংশ। জরায়ুর গায়ের সাথে ফুলে থাকা পানিভর্তি এই অংশটিকে নিয়ে ভয়ে থাকাটাই স্বাভাবিক। বিশেষ করে আপনি যদি সিস্ট সম্পর্কে যথেষ্ট না জেনে থাকেন, তাহলে তো কোনো কথাই নেই! তাই, ভয় ঝেড়ে ফেলে চলুন সিস্ট নিয়ে কিছু দরকারি ও প্রাথমিক তথ্য জেনে নেওয়া যাক-

সিস্ট কত রকমের হয়?

জরায়ুর সিস্ট ঠিক কেমন এটা তো জানলেনই। এবার চলুন, জেনে নেওয়া যাক সিস্ট ঠিক কত রকমের হয় সে সম্পর্কে। সিস্ট মোট ৪ রকমের হয়ে থাকে। সেগুলো হলো-

ফাংশনাল সিস্ট:-

এই ধরনের সিস্ট সবচাইতে বেশি হতে দেখা যায়। মোট দুইটি ভাগে একে ভাগ করা যায়। একটি হলো- ফলিকেল সিস্ট, এবং আরেকটি হলো কর্পাস লিউটেয়াম সিস্ট। ডিম্বানু তৈরি হওয়ার সময় সেটাকে ফলিকেল সিস্ট বলা হয়। এরপর যদি নিজ থেকে এই সিস্ট দূর না হয় তাহলে সেটি কর্পাস সিস্টে পরিবর্তিত হয়ে যায়।

ডারময়েড সিস্ট:-

জরায়ুর কোষ থেকে ডারময়েড সিস্ট তৈরি হয়। এতে অনেক সময় চুল, দাঁত এবং হাড়ের টিস্যুও থাকে।

এন্ডোমেট্রিওটিক সিস্ট:-

গর্ভের কোনো অংশ বা টিস্যু যদি জরায়ুতে চলে যায় তাহলে সেখান থেকে এন্ডিওমেট্রিক সিস্ট তৈরি হয়।

সিস্টাডেনোমাস:-

এই সিস্ট থেকে ক্যানসার হয় না। সাধারণত জরায়ুর উপরিভাগে এই সিস্ট জন্ম নিয়ে থাকে।

জরায়ুর সিস্ট কীভাবে পরীক্ষা করা হয়?

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অন্য কোনো সমস্যার জন্য পরীক্ষা করতে গিয়ে চিকিৎসকেরা সিস্টের খোঁজ পান। তবে অস্বাভাবিক কোনো সিস্টের কারণে হওয়া ব্যথার জন্যও চিকিৎসকের কাছে গিয়ে সিস্টের দেখা পান অনেকে।

সাধারণত, সিটি স্ক্যান, আলট্রাসাউন্ড, এমআরআই স্ক্যান এবং ম্যামোগ্রামের মাধ্যমে সিস্টের অবস্থা জানা হয়। তবে সিস্টের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা বায়োপ্সি করেন এবং পরবর্তীতে সার্জারি করে সেটাকে বের করে আনেন।

এমআইএস সিস্টেক্টোটোমি কী?

জরায়ু থেকে সিস্ট দূর করার জন্য বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতিটি হলো এমআইএস সিস্টেক্টোটোমি। একে ল্যাপ্রোস্কোপিক সার্জারিও বলা হয়। এক্ষেত্রে সার্জন একটি ছোট্ট ছেদ করবেন এবং সেখানে ক্যামেরা ও টেলিস্কোপসহ খুব ছোট্ট সার্জিকাল যন্ত্রপাতি প্রবেশ করাবেন এবং সিস্টকে বের করে নিয়ে আসবেন।

এ সময় সাধারণত জেনারেল অ্যানেস্থেসিয়া ব্যবহার করা হয়। নাভীর মাধ্যমেই সিস্ট বের করে আনার চেষ্টা করা হয়। বর্তমানে এই ব্যাপারটি খুব সহজ হয়ে গিয়েছে।

ওপেন সার্জারির চাইতে ল্যাপ্রোস্কোপিক সার্জারি কেন ভালো?

ওপেন সার্জারিতে পেটের ক্ষত একটু বড় হয়। এতে রক্তপাত বেশি হয় এবং ক্ষত দেখাও যায় বেশি। হাসপাতালে একটু বেশি সময় থাকতে হয় এই সার্জারির ক্ষেত্রে। অন্যদিকে ল্যাপ্রোস্কোপিক সার্জারিতে রক্তপাত অনেক কম হয়। ক্ষত কম হয় এবং খুব দ্রুত সেরে ওঠে রোগীরা।

এমন নয় যে সিস্ট হলেই সেটাকে অপারেশনের মাধ্যমে সরাতে হবে। তবে, আপনার চিকিৎসক বেশ কিছুদিন দেখার পর যদি সিস্টকে নেতিবাচক কিছু হিসেবে চিহ্নিত করেন, তাহলে চেষ্টা করুন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যতটা দ্রুত সম্ভব সার্জারি করে ফেলার। এতে করে ভবিষ্যতে বড় কোনো সমস্যার হাত থেকে সহজেই মুক্তি পাবেন আপনি।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button