ফাংশনাল ওভারিয়ান সিস্ট: কি করা উচিত
ওভারিয়ান সিস্ট এবং টিউমার দুটি আলাদা বিষয় হলেও অনেক সময় এ নিয়ে কনফিউশন থেকে যায়, যার ফলে ওভারিতে ফাংশনাল/ফিজিওলজিক্যাল সিস্ট থাকলেও সঠিকভাবে বুঝতে না পেরে রোগীরা দুশ্চিন্তায় ভোগেন। যদিও এই ধরনের সিস্টগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আপনা-আপনি মিলিয়ে যায়, অনেক সময় গ্রামে-গঞ্জে কিছু অসাধু ক্লিনিক ব্যাবসায়ীগন এমন রোগীর অপারেশন করিয়ে তাদের প্রতারিত করে থাকেন।
ওভারিতে ফাংশনাল সিস্ট তৈরির কারণ:
শরীরে যদি কোন কারণে হরমোনের তারতম্য হয় তবে ফাংশনাল বা ফিজিওলজিক্যাল সিস্ট তৈরি হতে পারে। এমন কিছু সিস্ট হচ্ছে ফলিকুলার এবং কর্পাস লুটিয়াম সিস্ট। শরীরে হরমোনাল ইমব্যালেন্স হলে ওভুলেশন বা ডিম্বস্ফুটন ব্যাহত হয়। নিয়মিত ভাবে ডিম্বস্ফুটন না হলে ডিমের এই আবরণীর মধ্যে পানি জমে পরবর্তীতে ফলিকুলার সিস্ট এ পরিণত হয়।
ফাংশনাল ওভারিয়ান সিস্টের লক্ষণ
* সাধারণত এরা আ্যসিম্পটোমেটিক হয়ে থাকে, অর্থাৎ কোন লক্ষন প্রকাশ করে না। তবে কিছু ক্ষেত্রে তলপেটে ব্যথা হতে পারে।
* বিভিন্ন রকম ওভারিয়ান সিস্ট এর মধ্যে ফলিকুলার সিস্ট সবচেয়ে কমন, যা পলিসিস্টিক ওভারিতে হয়ে থাকে। এই ধরনের রোগীরা অনিয়মিত মাসিক এবং বন্ধ্যাত্বের মত সমস্যায় ভুগে থাকে। এছাড়া এই সিস্টের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য যে সমস্যাগুলো থাকতে পারে তা হচ্ছে– অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি, শরীরে অবাঞ্চিত লোম, রক্তের ব্লাড সুগার বা কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি।
ডায়াগনোসিস
ফাংশনাল সিস্টের এর সাইজ সাধারণত ৫-৭ সেমি হয়ে থাকে, ভিতরে ক্লিয়ার ফ্লুয়িড/পানি থাকে আল্ট্রাসাউন্ড এর মাধ্যমে ডায়াগনোসিস হয়।
চিকিৎসা
অন্যান্য ওভারিয়ান টিউমারের চিকিৎসা অপারেশন হলেও ওভারিয়ান সিস্ট এর চিকিৎসায় অপারেশন দরকার হয় না, হরমোনাল ওষুধ দেয়া যেতে পারে। সাধারণত ২-৩ মাসের মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এগুলো চলে যায়। এ সময় অবশ্যই একজন গাইনোকোলজিস্ট এর তত্বাবধানে থাকতে হবে।
তবে অপারেশন লাগতে পারে, যদি-
* ওভারিয়ান সিস্ট টুইস্ট/পেঁচিয়ে যায় অথবা ফেটে হয়। এক্ষেত্রে হঠাৎ করে পেটে প্রচন্ড ব্যথা হয় এবং ইমার্জেন্সি ভাবে চিকিৎসা করাতে হয়।
* দীর্ঘদিন ধরে একই রকম থাকলে অথবা ধীরে ধীরে সাইজ বড় হলে কিংবা টিউমারের কোন লক্ষণ দেখা দিলে।
* এবং মহিলাদের ৪০ বছরের পর যেকোন ওভারিয়ান সিস্ট/টিউমার গুরুত্বের সাথে চিকিৎসা করাতে হবে, কারণ এক্ষেত্রে ক্যান্সার হবার চান্স থাকে।
মনে রাখতে হবে, ওভারির ডারময়েড সিস্ট এবং চকলেট সিস্ট এর নামকরণে সিস্ট থাকলেও এগুলো ফাংশনাল বা ফিজিওলজিক্যাল নয়। এগুলো ওভারির প্যাথলজিকাল টিউমার, তাই এর চিকিৎসা পদ্ধতিও ভিন্ন।