আন্তর্জাতিক

ইরাকে তীব্র হচ্ছে বিক্ষোভ, বাড়ছে প্রাণহানি

শিয়া মতালম্বীদের পবিত্র শহর কারবালায় নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে আরও দুই বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। চিকিৎসাকর্মীরা জানিয়েছেন প্রাদেশিক সদর দফতরের কাছে রাতভর সহিংসতায় তারা প্রাণ হারায়। এছাড়া এর আগের ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয় অন্তত ১৩ জন। এসব প্রাণহানি সত্ত্বেও বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। উম কাসার বন্দরের প্রবেশ পথ অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বসরায় জারি করা হয়েছে কারফিউ। এছাড়া রাজধানী বাগদাদের তাহরির স্কয়ার ঘিরেও অবস্থান ধরে রেখেছে বিক্ষোভকারীরা।

কর্মসংস্থানের সংকট, নিম্নমানের সরকারি পরিষেবা এবং দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বাগদাদের রাজপথে নামেন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দলের অনুসারী না হয়েও রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে অনিয়মের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের আওয়াজ নিয়ে রাজপথে নামেন আন্দোলনকারীরা। নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস ও গুলি চালিয়ে তাদের ওপর চড়াও হলে এই বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়ে ওঠে, ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন শহরে। বিশেষ করে শিয়া অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলীয় বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ ব্যাপক আকার ধারণ করে। এসব বিক্ষোভে সহিংসতায় আড়াই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। কর্মসংস্থানের সংকট ও দুর্নীতির অভিযোগে বিক্ষোভ শুরু হলেও সেটি এখন সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।

সোমবার দিনের বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে আট জন নিহত হওয়ার পর রাত ও মঙ্গলবার সকালের মধ্যে আরও পাঁচজন নিহত হয়। বিক্ষোভকারীরা বসরা শহরের দক্ষিণাঞ্চলে উম কাসর বন্দর অবরুদ্ধ করে রাখে। সেখানে গুলি চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। এতে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। স্থানীয় সময় রাত দশটা থেকে কারফিউ আরোপ করা হয়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অবরোধ ঠেকাতে প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে কারফিউ আরোপ করা হয়েছে। প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।

আধা সরকারি সংস্থা ইরাকি হাই কমিশন ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে,নাসিরিয়া শহর থেকে দক্ষিণে শাত্রা এলাকায় বিক্ষোভে দুই জন নিহত ও অপর ২৩ জন আহত হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে নাসিরিয়ায় নিহত দুজন মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীরা এক সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তার বাড়িতে হামলা চালানোর চেষ্টা করে।

এদিকে মঙ্গলবার রাতে কারবালা শহরে বিক্ষোভের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে দুই জন নিহত হয়। প্রাদেশিক সদর দফতর ঘিরে বিক্ষোভের সময় চড়াও হয় তারা।

ইরাকে চলমান এই সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন, দেশটিতে নিযুক্ত জাতিসংঘ দূত। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, সহিংসতা কেবল সহিংসতাই বাড়ায়, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের অবশ্যই সুরক্ষা দিতে হবে। জাতীয় সংলাপের এখনই সবচেয়ে ভালো সময়।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button