কাশ্মীর ইস্যুতে লন্ডনে বিক্ষোভ, ভারতীয় হাই কমিশনে হামলা
ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ভূস্বর্গ খ্যাত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় অঞ্চলটিতে ইতোমধ্যে এক থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যা নিয়ে পরবর্তীতে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির রেশ এবার প্রতিবেশী পাকিস্তানের পর পড়তে শুরু করেছে গোটা বিশ্বে।
যার অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ১২ টায় কাশ্মীরিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে উপত্যকাটিতে ভারতীয় দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে। পরবর্তীতে উত্তেজিত জনতা দেশটিতে অবস্থিত ভারতীয় হাই কমিশন ভবনেও হামলা চালানোর চেষ্টা করে।
সূত্রের বরাতে গণমাধ্যম ‘এনডিটিভি’ জানায়, প্রায় ১০ হাজারের বেশি লোক এবারের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেন। যদিও আয়োজকদের দাবি, এ দিনের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ২০ হাজারের মতো। তারা সকলে লন্ডনে অবস্থিত ভারতীয় হাই কমিশন প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়ে কাশ্মীরিদের স্বাধীনতার দাবিতে আওয়াজ তোলেন।
তখন উত্তেজিত জনতা ‘উই ওয়ান্ট ফ্রিডম’, ‘ফ্রিডম ইজ রাইট অব কাশ্মীর’, ‘টেররিস্ট-টেররিস্ট মোদী টেররিস্ট’, ‘ইন্ডিয়া লিভ কাশ্মীর’, ‘সেভ কাশ্মীর ফ্রম বিজেপি অ্যান্ড আরএসএস,’ ‘কাশ্মীরিজ নিডস জাস্টিস’সহ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন। পরবর্তীতে ঘটনার এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ভারতের হাই কমিশন ভবন লক্ষ্য করে ডিম, টমেটো, জুতা, পাথর, বোতল, স্মোক বম্ব (ধূমবোমা) নিক্ষেপ করতে থাকেন। এতে ভবনটির বেশ কয়েকটি জানালা পুরোপুরি ভেঙে যায়।
এ দিকে এক টুইটার পোস্টে বেশ কয়েকটি ভাঙা জানালার ছবি প্রকাশ করেছে ভারতীয় হাই কমিশন। যেখানে বলা হয়, গত ৩ সেপ্টেম্বর লন্ডনে ভারতীয় হাই কমিশনের প্রাঙ্গণে সহিংস বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ভবন চত্বরের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
এর আগে গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছিল ক্ষমতাসীন মোদী সরকার। যার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে বিতর্কিত লাদাখ ও জম্মু ও কাশ্মীর সৃষ্টির প্রস্তাবেও সমর্থন জানানো হয়।
এসবের মধ্যেই চলমান কাশ্মীর ইস্যুতে পাক-ভারত মধ্যকার সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে একে একে ভারত সরকারের সঙ্গে বাণিজ্য, যোগাযোগসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিবেশী পাকিস্তান। যদিও এমন সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে ভারত পাশে পেয়েছে রাশিয়াকে এবং পাক সরকারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এশিয়ার পরাশক্তি চীন ও মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ ইরান।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারসহ রাজ্যের স্থানীয় প্রশাসন সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে জানানো হলেও; কাশ্মীর জুড়ে এখনো সংঘর্ষ ও গ্রেফতারের ঘটনা ঘটছে বলে দাবি পাকিস্তানের।