আন্তর্জাতিক

চীনের রকেটটি কোথায় আছড়ে পড়বে, জানা যাবে কখন?

চীনের ‌‘লং মার্চ ৫বি’ রকেটটির টুকরো নিয়ন্ত্রণহীনভাবে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে। ধারণা করা হচ্ছে এ সপ্তাহের যে কোনো সময় এটি পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়বে। ঠিক কখন ও পৃথিবীর কোন অংশে আছড়ে পড়বে, তা এখনও বলতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা। তবে এটি আছড়ে পড়ার এক ঘণ্টা আগে কোথায় পড়ছে, বিজ্ঞানীরা তা জানাতে পারবেন।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, রকেটের ধ্বংসাবশেষ ১০ মে বা তার দুই-এক দিন আগে-পরে পৃথিবীতে পড়তে পারে।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, মহাকাশে এই রকেটের ধবংসাবশেষ এখন পৃথিবী প্রদক্ষিণ করছে এবং এটি বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরে ঢুকছে। যার মানে হলো, এটি পৃথিবীর চারদিকে বৃত্তাকারে ঘুরতে ঘুরতে নিচের দিকে নেমে আসছে।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা ধ্বংসাবশেষের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে। তবে সেটিকে গোলার আঘাতে ধ্বংস করে নিচে নামিয়ে আনার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই।

মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন বলেছেন, আমরা আশা করছি যে, এটি এমন জায়গায় ধসে পড়বে যেখানে কারও কোনো ক্ষতি হবে না। আশা করি সমুদ্র বা এমন কোথাও পড়বে।

তিনি পরোক্ষভাবে চীনের সমালোচনা করে বলেন, যেকোনো পরিকল্পনা ও অভিযান পরিচালনার সময় এ ধরনের বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়াটা বেশ জরুরি।

এদিকে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম গত কয়েকদিন ধরে আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছে, এই রকেটের ধ্বংসাবশেষ জনবহুল অঞ্চলে বিধ্বস্ত হতে পারে আবার আন্তর্জাতিক জলসীমাতেও পড়তে পারে। মহাকাশ বিশেষজ্ঞ সং ঝংপিংয়ের বরাত দিয়ে গ্লোবাল টাইমস বলেছে, চীনের স্পেস মনিটরিং নেটওয়ার্ক এ বিষয়ে নিবিড়ভাবে নজর রাখবে এবং কোথাও কোনো ক্ষতি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

আর্থ অবজারভেটরি সিঙ্গাপুরের জেসন স্কট হেরিন বিবিসিকে বলেন, মধ্যাকর্ষণ টানের ফলে এই ধ্বংসাবশেষ নিচের দিকে আরও ঘণ বায়ুমণ্ডলের দিকে নামতে থাকবে, এর ফলে মধ্যাকর্ষণ টান এবং নিচের দিকে নেমে আসার গতিবেগ আরও বাড়তে থাকবে।

তিনি বলেন, একবার এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলে, বস্তুটি একটি নির্দিষ্ট দিকে নিচের দিকে ধেয়ে আসতে থাকবে।

ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার উচ্চতায় বায়ুমণ্ডল ক্রমেই ঘন হতে থাকায় রকেটের ধ্বংসাবশেষের বেশিরভাগ আগুনে পুড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যে অংশগুলো পুড়বে না সেগুলো পৃথিবীতে ভেঙে পড়বে। যদি এসব কিছু অনিয়ন্ত্রিতভাবে হয়ে থাকে তাহলে কোথায় রকেটের ধ্বংসাবশেষ পুড়বে এবং কোথায় এসে পড়বে সেটাও নিয়ন্ত্রণ করা বা সঠিক পূর্বাভাসও দেওয়া যাবে না।

গত ২৯ এপ্রিল ‘লং মার্চ ৫বি’ নামের রকেটটি চীনের হাইনান দ্বীপ থেকে তিয়ানহে মডিউল নিয়ে পৃথিবীর কক্ষপথের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তিয়ানহে মডিউল চীনের নির্মাণাধীন স্থায়ী মহাকাশ স্টেশনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। স্টেশনটির তিন ক্রুর বসবাসের কোয়ার্টার এই মডিউলটিতে করেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button