যা করছি যথেষ্ট নয়, রাষ্ট্রপুঞ্জে দাঁড়িয়ে সরব মোদী
ক’দিন আগে মার্কিন সেনেটে আধিকারিকদের সামনে দাঁড়িয়ে ১৬ বছরের মেয়েটা অকপটে বলেছিল, ‘পৃথিবীকে বাঁচাতে আপনারা যা করছেন, তা যথেষ্ট নয়।’ সোমবার রাষ্ট্রপুঞ্জের জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে সেই একই সুর শোনা গেল ভারতের প্রধানমন্ত্রীর গলায়। নিউ ইয়র্কের মাটিতে দাঁড়িয়ে নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য, ‘এটা মানতেই হবে, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে যে চ্যালেঞ্জের মুখে আমরা দাঁড়িয়ে, তা কাটিয়ে উঠতে গেলে আমরা যা করছি, সেটা যথেষ্ট নয়। এর জন্য বিশ্বজুড়ে ব্যবহারিক পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। ভারত এখানে শুকনো কথা বলতে আসেনি, বরং রোডম্যাপ নিয়ে এসেছে। আমরা পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়াতে চলেছি।’
রাষ্ট্রপুঞ্জের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে মোদী যখন এই কথা বলছেন, দর্শকাসনে তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যাঁর ওই অনুষ্ঠানে আসারই কথা ছিল না! সোমবার ধর্ম সংক্রান্ত একটি সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা ছিল ট্রাম্পের। কিন্তু সকলকে চমকে দিয়েই এ দিন জলবায়ু সম্মেলনে হাজির তিনি! মিনিট দশেক থেকে, মোদীর বক্তব্য শুনে বেরিয়ে চলে যান, যা দেখে আন্তর্জাতিক মহলের একাংশের বিশ্লেষণ, রবিবার হিউস্টনে ‘হাউডি মোদী’র মঞ্চে যে বন্ধুত্ব দেখা গিয়েছে, তা মজবুত করতেই ট্রাম্পের এই চমক।
২০৫০-এর মধ্যে বিশ্বে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার বার্তা দিয়ে নান্দীমুখ বেঁধে দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তেনিও গুতারেস। তার পর অবশ্য সুইডেনের ষোড়শী গ্রেটা থুনবার্গের আগ্রাসী মেজাজ দেখেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চ। মুখচোরা এই পরিবেশকর্মী রাষ্ট্রনেতাদের চোখে চোখ রেখে বলে, ‘আমার তো এখানে থাকার কথা নয়। মহাসাগরের ওপারে গিয়ে স্কুলে পড়াশোনা করার কথা। কিন্তু আপনারা আশা নিয়ে আমাদের মতো বাচ্চাদের কাছে আসছেন। আপনাদের সাহস হয় কী করে? আপনারা ফাঁকা কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমার স্বপ্ন, শৈশব চুরি করেছেন। তাও তো আমি ভাগ্যবান। লোকে কষ্ট পাচ্ছে, পুরো বাস্তুতন্ত্র ভেঙে পড়ছে। আমরা গণবিলুপ্তির দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। আর আপনারা অর্থনৈতিক বৃদ্ধির রূপকথা আর অর্থের গল্প শোনাচ্ছেন?’ থুনবার্গের এই কড়া বার্তার পর মোদীর বক্তব্য অনেকটা আশ্বাসের মতোই শুনিয়েছে।
পরিবেশ রক্ষায় ভারতের একাধিক উদ্যোগের কথা তুলে ধরে মোদীর দাবি, ভারতের সৌরশক্তি ব্যবহারের উদ্যোগে সামিল হয়েছে ৮০টি দেশ। তাঁর কথায়, ‘লাখ লাখ পরিবারে রান্নার গ্যাসের সংযোগ পৌঁছে দিয়েছি। জলসম্পদ উন্নয়ন, সংরক্ষণ এবং বৃষ্টির জল ধরে রাখার ‘জল জীবন’ মিশন শুরু করেছি। ভারতের স্বাধীনতা দিবসে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধের ডাক দিয়েছি। এখন আর কথা নয়, কাজ করে দেখানোর সময়।