আন্তর্জাতিক

যে কারণে মোদির সমাবেশে যাচ্ছেন ট্রাম্প

কণিকা ডেস্ক :

দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকদের জাতীয়তাবাদী আবেগ কাজে লাগিয়ে নেতা হয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ঐতিহ্যবাহী ও মূলধারার গণমাধ্যমে তারা দুজনেই হাসির পাত্র।

কাজেই নিজেদের ঘোষণাগুলো দিতে টুইটারকেই সহজ উপায় বলে মনে করেন তারা।

এবার নিজেদের মধ্যকার সম্পর্ক ও জোটকে দৃষ্টিগ্রাহ্য করতে ভারতীয় সংস্কৃতির অদ্ভুত রীতিতে দুই নেতা এক জায়গায় হতে যাচ্ছেন।

হাউসটনের যুক্তরাষ্ট্রের বসবাস করা ভারতীয়দের একটি সমাবেশে মোদির সঙ্গে যোগ দেবেন ট্রাম্প। স্থানীয় একটি বড় ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠেয় এই সমাবেশে ৫০ হাজার দর্শক উপস্থিত হবেন বলে আয়োজকদের প্রত্যাশা।

ক্যাথলিক ধর্মীয় গুরু পোপ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বিদেশি নেতাদের জন্য এতবড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা।

যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, ‘হাউডি, মোদি’ নামের এই অনুষ্ঠানে মোদি ও ট্রাম্পের মধ্যকার ব্যক্তিগত রসায়ন ও বন্ধুত্ব দেখা যাবে। এটিকে অদ্বিতীয় ও অগতানুগতিক দৃষ্টান্ত বলে আখ্যায়িত করেন তিনি।

চলতি বছরের নির্বাচনে নতুন ম্যান্ডেট দিয়েছেন ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নিজের জনপ্রিয়তাকে জাহির করতে দেশের বাইরে সফরের সময় জনসমাবেশে বক্তৃতা দেয়ার ক্ষেত্রে তার একটি অনুরাগ রয়েছে।

খ্যাতির প্রতি খুব একটা অনুরক্ত না হলেও এই অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের উপস্থিতিকে অনেকে অস্বাভাবিক ভাবছেন। ভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে বিদেশিদের এই অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের যোগ দেয়ার ঘটনা একেবারেই বিরল।

অভিবাসীদের প্রতি তার কঠোর মনোভাব এবং নৃতাত্ত্বিক বৈচিত্র্যকে তিনি উদযাপন করেছেন বলে কোনো নজির নেই। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের ঠেকাতে সীমান্তের দেয়াল নির্মাণসহ বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করছেন ট্রাম্প।

তবে তার এই উপস্থিতি আগামী ১৪ মাস পর মার্কিন নির্বাচনে হাউসটনবাসীর কাছে তার ভাবমর্যাদাকে নমনীয় করতে সহায়তা করবে। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম একটি বহুজাতিক শহর হচ্ছে এটি। এ ছাড়া বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টির ঘাঁটি হতে যাচ্ছে হাউসটন।

৪০ লাখ ভারতীয়-আমেরিকান সম্প্রদায় সেখানে রয়েছেন। কাজেই নির্বাচনে তারা একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা তৈরি করতে পেরেছেন। হাউসটনের পরিবারগুলোর গড় আয় এক লাখ ডলারের মতো। সেক্ষেত্রে সমৃদ্ধশালী মার্কিন গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ভারতীয়-আমেরিকানরাও রয়েছেন।

জাতিসংঘে ট্রাম্পের প্রথম রাষ্ট্রদূত নিক্কি হ্যালির মতো উচ্চমর্যাদার ভারতীয়-আমেরিকান থাকা সত্ত্বেও তারা অবশ্যই কোনো ভনিতা ছাড়াই ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন দিচ্ছেন।

২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এসব ভারতীয়-আমেরিকানদের ৮০ শতাংশ হিলারি ক্লিনটনকে ভোট দিয়েছিলেন।

আয়োজকরা বলছেন, তারা অনুষ্ঠানটিকে দল-নিরপেক্ষ রাখার চেষ্টা করছেন। প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্রেটিক নেতা স্টেনলি হোয়ারকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানালেন তারা।

আনন্দবাজারপত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, হাউডি মোদী নিয়ে ট্রাম্পের পদক্ষেপের পিছনে রয়েছে ঘরোয়া রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতাও। ভারতীয় বংশোদ্ভূত সম্প্রদায় মার্কিন রাজনীতিতে ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

তাই আগামী বছরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্প এই সম্প্রদায়কে ইতিবাচক বার্তা দিতে চাইছেন।

ভারতীয় ব‌ংশোদ্ভূত মার্কিনদের মধ্যে শতকরা ৬২ ভাগ নিজেদের ডেমোক্র্যাট হিসেবেই পরিচয় দেন। কিন্তু তাদেরও খুশি রাখতে পারলে ট্রাম্পের ভোটের বাজারে লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button