বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

সারাদেশে ১৮ অক্টোবর ইন্টারনেট ও টিভি ক্যাবল সেবা বন্ধ রাখার হুঁশিয়ারি

ছয়দফা দাবি না মানলে ১৮ অক্টোবর সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সারাদেশের বাসাবাড়ি-অফিস ও ব্যাংকসহ সব পর্যায়ে ইন্টারনেট ডাটা কানেক্টিভিটি ও টিভি ক্যাবল বন্ধ রাখার প্রতীকী কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) ও ক্যাবল অপারেটর্স অব বাংলাদেশ (কোয়াব)। আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয় এই দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে।

তাদের ছয়দফা দাবিগুলো হচ্ছে, লাস্ট মাইল ক্যাবলের স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কোনো ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণ করা যাবে না। আইএসপিএবি, কোয়াব, বিটিআরসি, এনটিটিএন এবং সিটি করপোরেশনের সমন্বয়ে লাস্ট মাইল ক্যাবল স্থাপন করা হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করতে একটি কমিটির মাধ্যমে সরেজমিন তদন্তের ব্যবস্থা করতে হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাসা বাড়ি, অফিসও ব্যাংকসহ সকল পর্যায়ে ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি সেবার মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি সেবা স্বল্পমূল্যে দেওয়ার লক্ষে এনটিটিএনের মূল্য সরকারকে নির্ধারণ করতে হবে। এ ছাড়া এনটিটিএনগুলোর সার্বিক সক্ষমতা আছে কি না তা যাচাইয়ের ব্যবস্থা থাকতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সহযোগিতার বিষয়টিও তুলে ধরা হয়।

লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলা হয়, বিকল্প কোনো কারিগরি ব্যবস্থা ছাড়াই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সৌন্দর্য বর্ধনে ফাইবার অপটিক ক্যাবল অপসারণ করা হচ্ছে। যোগাযোগ প্রযুক্তি ছাড়াও বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা বাণিজ্যসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাতে ইন্টারনেট কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে।  প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারি-বেসরকারি ভিডিও কনফারেন্স, শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস, ব্যাংকিং ও এটিএম কার্ড সেবা, অনলাইনে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও ওষুধ ক্রয়সহ বাসাবাড়িতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন সেবা দেওয়া হচ্ছে। একইভাবে সারাদেশে টেলিভিশন বিনোদন, শিক্ষা ক্লাসসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ সেবা দিচ্ছে কোয়াব।

আরও বলা হয়, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন গত আগস্ট থেকে আইএসপি ও ক্যাবল টিভি অপারেটরদের কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই সব সড়ক থেকে ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণ শুরু করে। এতে গত দুই মাসে অন্তত ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে আইএসপিএবি ও কোয়াবের। সৌন্দর্য বর্ধনকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু আগাম কোনো নোটিশ না দিয়ে কয়েক লাখ ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি গ্রাহকের সেবা নিশ্চিত না করে কোটি কোটি টাকার ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণ করা যৌক্তিক সমাধান নয়। এক দিকে যেমন লাখ লাখ গ্রাহক নানা সেবা থেকে বঞ্চিত হবে অন্য দিকে আইএসপি ও কোয়াবের লক্ষাধিক কর্মীসহ ৩৩টি স্যাটেলাইট টিভিতে কর্মরত অসংখ্য সাংবাদিক ও কর্মীরাও বেকার হয়ে পড়বে। এটা অমানবিক ও প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অন্তরায়।

সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিএবি আমিনুল হাকিম প্রগতি বলেন, আমরা সরকারকে নানাভাবে আমাদের সমস্যাগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করছি। একাধিকবার দক্ষিণ সিটি মেয়রের সঙ্গেও কথা বলেছি। কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না। কিন্তু আমরা যারা ইন্টারনেট ও ক্যাবল নিয়ে কাজ করছি, তাদের প্রতিটি সংগঠনের কাছ থেকে ২৫ কোটি টাকা নিবন্ধন ফি দাবি করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সেবা সংস্থাগুলোর পক্ষে এত টাকা দিয়ে নিবন্ধন ফি দেওয়ার সক্ষমতা নেই। তাছাড়া গত দুই মাসে দক্ষিণ সিটিতে তার কাটা বাবদ ২০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করতে হয়েছে। আমরা কোনো অবৈধ কাজ করিনি। আমাদের প্রতি সদয় হওয়ার জন্য বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করছি।

কোয়াব সভাপতি এসএম আনোয়ার পারভেজ বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য গ্রাহক সেবা দেওয়া। কোনোভাবেই জনগণকে আমরা ভোগান্তিতে ফেলতে চাই না। আমরা আশা করছি, ১৮ অক্টোবরের আগেই আমাদের সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। আশা করছি, আমাদের ক্যাবল ও ইন্টারনেট সংযোগের তার কাটা বন্ধ করবে এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বৈঠক করে এর একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান দেবেন ঢাকা সিটি করপোরেশন দক্ষিণের মেয়র। নইলে আমাদের ঘোষিত কর্মসূচিতে যাওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

এ সময় কোয়াব সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন মাসুদ আইএসপিএবি’র সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক, রাশেদ আমিন বিদ্যুৎ, সরোয়ার আলম, আসাদুজ্জামান সুজন, আহমেদ জুনায়েদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button