এ রায় ঘিরে সকাল থেকেই আদালত এলাকায় তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে।
আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশ করার সময় সবাইকে তল্লাশি করা হচ্ছে। সরকারি গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো যানবাহনকে আদালত এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
ইতোমধ্যে নুসরাতের সহপাঠী, বন্ধু, স্বজনসহ বিপুল সংখ্যক সংবাদকর্মী আদালত চত্বরে অপেক্ষা করছেন।
বাদীপক্ষের কৌঁসুলি এম শাহজাহান সাজু জানান, মামলার ১৬ আসামিকে রায়ের আগে ফেনী জেলা কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে আসা হবে। এ আদালতের বিচারক সাধারণত বেলা ১১টার দিকে আদালতে বসেন। তারপরই কোনো এক সময় রায় ঘোষণা হতে পারে।
দেশব্যাপী আলোচিত ওই ঘটনায় সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১৬ আসামির সাজা হবে কি না তা জানার আগ্রহ রয়েছে অনেকেরই। এ মামলায় সব আসামির বিরুদ্ধে আনা অপরাধ প্রমাণ হয়েছে দাবি করে আদালতে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে রাষ্ট্র ও বাদীপক্ষের আইনজীবীরা।
অন্যদিকে মামলায় ‘দুর্বল সাক্ষী ও বেশকিছু অসঙ্গতি’ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে উল্লেখ করে আসামিরা খালাস পাবেন বলে দাবি করেছেন তাদের আইনজীবীরা।
আইনজীবী শাহজাহান সাজু বলেন, ‘মামলার আসামিরা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে হত্যা করেছে তা আদালতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা আশা করি, আসামিরা সর্বোচ্চ শাস্তি পাবে। এ মামলাটি বাংলাদেশে উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হবে।’
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী কামরুল হাসান বলেন, ‘ন্যায়বিচারের মাধ্যমে আসামিরা খালাস পাবেন, কারণ রাষ্ট্রপক্ষ তাদের অভিযোগের স্বপক্ষে কিছুই প্রমাণ করতে পারেনি।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী পিবিআইর পরিদর্শক মো. শাহ আলম জানান, রায় ঘোষণার সময় মামলার ১৬ আসামিকে আদালতে হাজির করা হবে। এজন্য আদালত প্রাঙ্গণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাতকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ (বর্তমানে বরখাস্তকৃত) সিরাজ-উদ-দৌলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে তার পরিবারের অভিযোগ। টানা পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে মারা যান নুসরাত। এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে সিরাজসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।