রিফাত শরীফ হত্যা মামলা: মিন্নিসহ ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড
বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মিন্নিসহ ছয় আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আলোচিত এ মামলায় চারজনকে খালাস দেয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে এই রায় ঘোষণা করা হয়।
এর আগে বেলা ১১টা ৪৮ মিনিটে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে রায় পড়া শুরু হয়।
বুধবার এই মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় ঘোষণা করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজী, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, মো. হাসান, রেজওয়ান আলী খান হৃদয়।
রায়ে তাদের ৫০ হাজার টাকা করে জারিমানার আদেশ দেওয়াও হয়েছে।
অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর, কামরুল ইসলাম সাইমুন এবং মো. মুসাকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ভূবন চন্দ্র হালদার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রায় ঘোষণা উপলক্ষে জামিনে থাকা রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি সকাল ৯টায় তার বাবা মোজাম্মেল হক কিশোরের সঙ্গে আদালত প্রাঙ্গণে আসেন।
বেলা পৌনে ১২টার দিকে প্রিজন ভ্যানে করে রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয়, মো. হাসান, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুনকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। চার্জশিটভুক্ত আসামি মো. মুসা মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
রায় ঘিরে মঙ্গলবার রাতে রিফাতের বাবা আব্দুল হালিমের নিরাপত্তায় দুজন গানম্যান নিয়োগ করা হয়েছে। এ ছাড়া, রিফাতের বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এই মামলার রায়কে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল থেকেই শহরজুড়ে পুলিশি তৎপরতা দেখা যায়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার) মহরম আলী বলেন, “রিফাত হত্যার মামলার রায়কে ঘিরে আদালত চত্বরে তিন স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। মামলার বাদীর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আদালত চত্বরের পাশাপাশি শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে তল্লাশি করা হচ্ছে।”
গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। ওই বছর ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক দুই ভাগে ভাগ করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ।
১৪ আসামি অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাদের বিচার বরগুনার শিশু আদালতে চলমান রয়েছে।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। গত ৮ জানুয়ারি থেকে ১০ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মোট ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয় এ মামলায়।
