বিনোদন

এফডিসিতে বসে শুধু বক্তব্য দিলে কিছুই হবে না: ফারুক

‘আজকে যদি ইলেকশন যারা করেছেন তাদের  সবই থাকতেন তাহলে এ অনুষ্ঠান আরও সুন্দর লাগতো। কারণ শিল্পী হারেনা এবং জিতেও না।’ বুধবার দুপুর ১২টায় এফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাবে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত মিশা-জায়েদ প্যানেলের সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে মঞ্চে উঠেই কথাগুলো বলেন ঢাকাই ছবির লাঠিয়ালখ্যাত নায়ক ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান  ফারুক।

এ সময় মঞ্চে অভিনেতা সোহেলা রানা ও সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া শিল্পী সমিতির নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইলিয়াস কাঞ্চনও উপস্থিত ছিলেন।

নিজের বক্তব্যে ফারুক বলেন, ‘এফডিসি বঙ্গবন্ধুর সৃষ্টি। বঙ্গবন্ধু এই এফডিসি বানিয়ে দিয়ে গেছেন। সেই এফডিসিতেই আমরা কাজ করছি। এখানে অনেক ইতিহাসের সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রজন্মের অনেকেই সেই ইতিহাস জানে না। এটা জানা দরকার। এখানে কে শিল্পী, কে প্রযোজক, কে সিনেমা হলের মালিক- সেটা আমরা দেখবো না। সবাইকে এক কাতারে হয়ে সিনেমার উন্নয়নে কাজ করতে হবে। তাহলেই সিনেমার সেই সোনালী দিন ফিরে আসবে।’

এ সময় শিল্পীদের উন্নয়নে কিছু দেয়ার আগে হল মালিকদের আগে কিছু দেয়ার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানান তিনি। ফারুক বলেন, যারা সিনেমা হলের মালিক তারা আমাদের পরিবারেরই একটি অংশ। তাই সকারের কাছে বলবো, যেটা আমাদের দিচ্ছেন সেটা আমাদের না দিয়ে ওই সিনেমা হলের মালিকদের দেন। তারা আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয় করুক। হল উন্নয়ন করুক।

সংসদ সদস্য হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজের নির্বাচিত একটি এলাকার উন্নয়ের জন্য কিছু চাইতে গিয়েছিলেন ফারুক। তখন প্রধানমন্ত্রী তাকে বলেন. আগে সিনেমাটা দেখতে। তাই প্রধানমন্ত্রীও চান সিনেমার সুদিন ফিরে আসুক। ভালো ভালো চলচ্চিত্র নির্মিত হোক। এখন কেবল সিনেমার মানুষদের এক হয়ে তার কাছে চাওয়ার সময় বলেই মন্তব্য করেন ‘ লাঠিয়ার’, ‘গোলাপি এখন ট্রেনে’ ও ‘সুজন সখি’ ছবির জনপ্রিয় এ নায়ক।

সরকারের কোন খাতে কী আছে এফডিসির মানুষ সে খবর রাখেন না। তাই সরকারের কাছে সিনেমার কথা বলে নানা ধরনের প্রজেক্ট নিয়ে আসে সিনেমার বাইরের মানুষরা। বিষয়টি নিয়ে এফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাবের মঞ্চে বেশ আক্ষে ঝড়ে পড়লো এ অভিনেতার।

ফারুক বলেন, ‘আমার অবাক লাগে, সরকারের কাছে চলচ্চিত্রের মানুষ নেই। যারা আছেন তারা কারা? চরচ্চিত্রের মানুষ ছাড়া চলচ্চিত্রের নিয়ে কারা কথা বলছে? তাই বলি সবাই এক থাকেন। এক জাযগায় থাকেন। যদি বলেন, সরকারের কাছে আমাদের মূখপাত্র এমপি ফারুক আছেন। আমি বলে গেলাম, একা ফারুক কেনো, ফারুকের বাবাও কিছু করতে পারবে না। তবে আপনারা যখন আমাদের সাথে থাকবেন তখন অনেক কিছুই আসবে।’

দুঃখ জড়ানো আক্ষেপ প্রকাশ করে ফারুক আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে আমাকে কিছু শর্ট ফিল্মের কাজ দেয়া হয়েছে। এখানেও আমাদের ইন্ডাষ্ট্রির লোকেরা ঘুমিয়ে থাকে। তারা পত্রিকা পড়েনা। সরকারের কোথায় কোথায় কী আছে তারা সেটার খোঁজ রাখেন না। আমি বলি ওইখানে যান, আপনারা স্ক্রিপ্ট দেন। এটা  আগে করেন, তার পর আমি তো আছিই। ওখানে সব নাটকের মানুষ বসে আছেন। চলচ্চিত্রকে হেয় করে দেখেন তারা। চলচ্চিত্রকে তারা দেখতে পারেন না বলা যায়।

শুধু এফডিসির ভেতের এমন আয়োজনে বক্তব্য দিয়ে কিছু হবে না মন্তব্য করে ফারুক বলেন, ‘এখানে বসে বড় বড় বক্তব্য দিলে কিছু হবেনা। আপনারা গল্প নিয়ে ভাবেন। সিনেমার গল্প কেমন হবে সেটা নিয়ে ভাবেন। সিনেমা বানানোর টাকা আল্লাহই ব্যবস্থা করে দেবে।’

বুধবার এফডিসিতে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে আগামী ২০১৯-২১ মেয়াদে শিল্পী সমিতির নেতৃত্বের দায়িত্বে থাকবেন নবনির্বাচিতরা। অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি মিশা সওদাগরকে শপথ পাঠ করান শিল্পী সমিতির নির্বাচন কমিশনার ইলিয়াস কাঞ্চন। এরপর ধারবাহিকভাবে অন্য সদস্যদের শপথ পাঠ করান নতুন সভাপতি মিশা সওদাগর।

নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জায়েদ খান, রুবেল, ডিপজল, বাপ্পারাজ, রোজিনা,অঞ্জনা, অরুণা বিশ্বাস, আসিফ ইকবাল, জ্যাকি আলমগীর, সুব্রত, আরমান, জয় চৌধুরী, জেসমিন, মারুফ, ফরহাদ।

শিল্পী সমিতির নির্বাচনের আপিল বিভাগের দুই সদস্য খোরশেদ আলম খসরু ও শামসুল হক, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, মহাসচিব বদিউল আলম খোকন, নৃত্য পরিচালক মাসুম বাবুল ও সোহানুর রহমান সোহানও উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় শিল্পী সমিতির নির্বাচন। সেখানে সভাপতি পদে মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খান জয়ী হন। মৌসুমি, ইলিয়াস কোবরাসহ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে হারিয়ে মিশা-জায়েদ পুরো প্যানেল দ্বিতীয়বারের মতো শিল্পী সমিতির দায়িত্ব পান।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button