সৈয়দপুর হাসপাতালে সুস্থ হতে আসা রোগীরা বাড়ি ফিরছে নতুন রোগ নিয়ে!

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে অপরিচ্ছন ও নোংরা পরিবেশ আর দুর্গন্ধের মধ্যে চলছে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম। এতে হাসপাতালে সুস্থ হতে এসে নতুন রোগ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। এমন অভিযোগ এখানে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের।
গতকাল সরেজমিনে হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডের মেডিসিন বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, যত্রতত্র ফেলে রাখা হয়েছে ময়লা আবর্জনা। ফ্লোরে ময়লা আবর্জনার পাশেই চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছে রোগীরা। বিদ্যুৎস্পৃস্ট, ডায়রিয়াসহ প্রায় ৫ জন রোগীকে রাখা হয়েছে মেডিকেল আবর্জনাসহ ময়লাযুক্ত পানি ও দূর্গন্ধময় পরিত্যক্ত খাবার ভর্তি গামলার পাশে। তাছাড়া যেখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটে রয়েছে অসংখ্য ধুলাময়লা ও ওষধের খালি পাতা।
সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কিসামত ডাঙ্গুয়াপাড়ার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে সাইদুল রহমান (১৬) ও নীলফামারী সদর উপজেলার সোনারায় সংগলশি ইউনিয়নের বড়ুয়া দহরপাড়ার মৃত শওকতের ছেলে একরামুল (৩৫) শহরের পুরাতন বাবুপাড়া দারুল উলুম মোড় এলাকায় বহুতল ভবনে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃস্ট হয়ে গুরুত্বরভাবে আহত হয়। তাদের হাসপাতালে ফ্লোরে রাখা হয়েছে। অবনতির আশংকা থাকা সত্বেও কোন বেডের ব্যবস্থা করা হয়নি। তাদের স্বজনরা বলেন , এমার্জেন্সি রোগীর ক্ষেত্রে যে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন তা নার্সরা তা করেনি। অবহেলাসহ রোগীর সাথের লোকজনকে হয়রানী করেছেন। চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী রোগীদের ইসিজি করার ক্ষেত্রেও বিলম্ব করেছে। বলতে গেলে তারা দূর্ব্যবহারও করে। তাদের ভাবখানা এমন যে, কোন ভাবে রোগীদের অন্যত্র পাঠিয়ে দিতে পারলেই যেন তারা বাঁচে।
এছাড়া মুল রুমের পাশে করিডোরে ময়লার পাশেই একটি চাদর বিছিয়ে দেয়া বেডেই শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিন শহরের হাতিখানা মাছুয়াপাড়ার মৃত জিতেনের ছেলে সুবাস (৩৫)। তিনি অভিযোগ করে বলেন, দুপুর দেডটার দিকে শরীর হঠাৎ করে ফুলে যাওয়ার লক্ষণ দেখে হাসপাতালে আসলে চিকিৎসক ভর্তি হতে বলেন। ভর্তি হয়ে বেড না পেয়ে ফ্লোরেই চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়েছি। আমার পাশে থাকা ময়লাভর্তি গামলা ও ফ্লোরের ধুলাময়লা সরাতে বললেও দায়িত্বরত নার্স আমার কথায় কর্ণপাত করেননি। প্রয়োজনে ডাকলেও সারা দিচ্ছেন না।
একই অভিযোগ করেন ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগী শহরের গার্ডপাড়ার জাফর খানের ছেলে লিপন (২৬)। তিনি বলেন, হঠাৎ পাতলা পায়খানা দেখা দেয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। প্রয়োজনীয় বেড নেই তাই এই করিডোরেই রেখেছে। এখানে সর্বত্র ধুলা ময়লায় আচ্ছন্ন। পাশেই মেডিকেলের সকল আবর্জনা স্তুপ করে রাখা হয়েছে। অপরিচ্ছন্ন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আমার দম যেন বন্ধ হয়ে আসছে। একই রকম অবস্থা শিশুসহ অন্যান্য বিভাগের।
হাসপাতালে এ অবস্থার বর্ণনা দিয়ে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ ওমেদুল হাসান সম্রাট জানান, হাসপাতালে দুই বেলায় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। কেন ময়লার স্তুপ পরিস্কার করা হয়নি বিষয়টি আমি দেখবো।