রংপুর বিভাগসারাদেশ

উলিপুরে করোনা মহামারী বিস্তার রোধে এলাকাবাসির উদাসিনতা

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের উলিপুরে ‘করোনা ভাইরাস’ প্রতিরোধে জনগণ কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করায় ক্রমান্বয়ে বাড়ছে করোনা আতঙ্ক। ১টি পৌসভা ও ১৩টি ইউনিয়ণ নিয়ে গঠিত জেলার বৃহত্তম উপজেলাটির নাম উলিপুর। ৪৫ হাজার ৮’শ ৫৭ বর্গ কিলো মিটার আয়তনের এ উপজেলার জনসংখ্যা ৪ লক্ষ ২১ হাজার ৩’শ ৯০ জন। উপজেলা নির্বাহী অফিসা মোঃ আব্দুল কাদের ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির (ইস্টিভ) উলিপুরের ১৩টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন হাট-বাজার মসজিদ, মন্দিরে গিয়ে প্রত্যেককে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা, মাক্স ব্যবহার নিশ্চিতে সার্বক্ষণিক নির্দেশনা প্রদান করে আসছেন। এছাড়াও জেলা পুলিশ সুপারের বিশেষ নির্দেশনায় উপজেলা পুলিশ প্রশাসন করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

উপজেলার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ জন। এ গুলো হচ্ছে দুর্গাপুর ইউনিয়নে ৫জন, গুনাইগাছ ইউনিয়নে ৩জন, বুড়াবুড়ি ইউনিয়নে ২জন, হাতিয়া ইউনিয়নে- ১জন, পান্ডুল ইউনিয়নে ১জন ও বজরা ইউনিয়নে ১জন। সর্বশেষ, উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নরে নন্দুনেফরা গ্রামের ৭বছর বয়সী একটি শিশু এবং ১৮ বছর বয়সী এক যুবকের সর্দি, জ্বর ও কাশি দেখা দিলে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। ওই দুই জনের পরীক্ষার ফলাফলে তাদের শরীরে কোভিড-১৯ এর অস্থিত্ব পাওয়া যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুভাষ চন্দ্র সরকার জানান, পরীক্ষার ফলাফলে ওই দুই জনের শরীরে করোনার অস্থিত্ব থাকায় করোনায় আক্রান্তদের বাড়িসহ আশ-পাশের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।

গত রবিবার (৩১ মে) উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নে করোনায় আক্রান্তের খবর শুনে এক গৃহবধুর পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবরটি ছড়িয়ে পরলে রবিবার দুপুরে পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন-সহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল কাদের ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়িটি লকডাউন ঘোষনা করেন। এ ঘটনা জানাজানি হলে ওই গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

গত বৃহস্পতিবার (৪ জুন) জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম ঘোষণা করেন, করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় যুদ্ধ করে হলেও নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। একটি জীবানুর বিরুদ্ধে এ যুদ্ধে নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করেই কাজ করতে হবে। এ আহবানে উলিপুর উপজেলা প্রশাসন করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) ঠেকাতে উলিপুরে-নো মাস্ক নো সার্ভিস (মাস্ক নাই, সেবা নাই) কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন করোনা ঠেকাতে কমোড় বেঁধে কাজ করছেÑ উপজেলার ১টি পৌরসভা-সহ ১৩টি ইউনিয়নে। বাজারের দোকানদাররা মাস্কহীন মানুষের কাছে পণ্য বিক্রি করতে পারবে না। বিকাল ৪টার পর বাজারের দোকানপাট বন্ধ রাখতে হবে। সাধারণ মানুষকে শাস্তি দিতে নয়, সচেতন করেই করোনা ঠেকাতে হবে বলেই প্রশাসনের বিশ্বাস। কিন্তু সাধ্রাণ মানুষ সবকিছু বোঝেও আমলে না নিয়ে উদাসিনতায় করোনা ভাইরাস প্রতিরেধের কোন নিয়মেই মানছেন না।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button