জাতীয়

ইউএনও ওয়াহিদার অবস্থার উন্নতি, হাসপাতালে মূল আসামি

দুর্বৃত্তের হামলায় আহত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের শারীরিক পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো বলে জানিয়েছেন নিউরো সায়েন্স ইন্সটিটিউট হাসপাতালের নিউরো ট্রমা বিভাগের প্রধান ডা. জাহেদ হোসেন।

শনিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান ডা. জাহেদ হোসেন এসব কথা জানান।

এদিকে, ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলার মূল আসামি আসাদুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আটক করা অপর দুজন নবীরুল ইসলাম ও সান্টু কুমার বিশ্বাসকে দিনাজপুর জেলা জজ আদালতে তোলা হচ্ছে।

শনিবার সকালে ঘোড়াঘাট থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোজাফফর হোসেন জানান, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার সময় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদস্য বাবুল হোসেন নবীরুল ও সান্টুকে ঘোড়াঘাট থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। পরে আজ সকাল নয়টার সময় তাদের দিনাজপুর জেলা জজ আদালতে পাঠানো হয়। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আদালতের কাছে পাঁচ দিনের রিমান্ড চাইবে। মামলায় আসাদুলকে প্রধান আসামি করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

চিকিৎসকরা জানান, ওয়াহিদা খানমের চেতনা মাত্রা ১৫ তে ১৫, যা সুস্থ মানুষের সমান। অন্যান্য শারীরিক পরিস্থিতিও উন্নত হচ্ছে দ্রুত।

ড. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, নতুন করে কোন সংক্রমণ না হলে দ্রুতই সুস্থ হবেন ওয়াহিদা খানম। সংক্রমণ রোধে রোগীর আত্মীয়স্বজন ও সহকর্মীদের সাক্ষাৎ নিয়ন্ত্রণের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

ওয়াহিদা খানমের ডান পাশ প্যারালাইজড ছিল, বর্তমানে এ অবস্থার কোনো উন্নতি হয়েছে কি-না জানতে চাইলে ডা. জাহেদ হোসেন বলেন, ওই অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি, যেমন ছিল তেমনই আছে। যেহেতু ওনার ব্রেনের একটা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, হাড় ভেঙে ব্রেনে কিছুটা আঘাত করেছে সেজন্য এটার এখনো কোনো উন্নতি হয়নি। এ ক্ষেত্রে কতদিন লাগবে বা কতটুকু উন্নতি হবে এ মুহূর্তে বলা কঠিন। তবে আমরা আশাবাদী এটা উন্নতি হবে।

রক্তক্ষরণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন তার নতুন করে কোনো রক্তক্ষরণ নেই। সামান্য কিছু রক্তক্ষরণ ছিল সেগুলো আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।

আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তরের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা তাকে ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার কথা বলেছি। এই ৭২ ঘণ্টা তাকে আইসিইউতে রেখে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। পরে পরশু সকালে আমরা মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা বসে সিদ্ধান্ত নেবো তিনি আইসিউতে আরও থাকবেন কি-না।

বৃহস্পতিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ৬ সদস্যের চিকিৎসক দল প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ইউএনও ওয়াহিদার মাথায় জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করে।

অস্ত্রোপচার শেষেই তাকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চিকিৎসকরা। তাৎক্ষণিকভাবে তার সেরে ওঠার বিষয়ে আশাবাদী হলেও তিনি শঙ্কামুক্ত নন বলে জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, বুধবার (০২ সেপ্টেম্বর) রাতে বাসভবনের ভেন্টিলেটর দিয়ে বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর হাতুড়ি দিয়ে হামলা চালানো হয়। গুরুতর আহত ওয়াহিদাকে বৃহস্পতিবার ঢাকার জাতীয় নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে আনা হয়।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে ঘোড়াঘাট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন ওয়াহিদার ভাই শেখ ফরিদ উদ্দিন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button