সারাদেশ

করোনা প্রতিরোধে কাজ করছেন পান বিক্রেতা আকাশ

নাটোর প্রতিনিধি: করোনাভাইরাস সারা পৃথিবী যখন মহামারী আকার ধারন করেছে তখন সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে থেকে বিবেকবানরা এগিয়ে এসেছে তাদের সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে। যাতে  প্রতিরোধ আর মানবতার সেবা দুটোই করা যায়। প্রকৃতপক্ষে আমাদের সমাজে অনেক বিত্তবান রয়েছে কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ গুলো কখনো বিবেকের দংশনে দংশিত হয়নি। আবার মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে অনেকেই তার সাধ্যমত চেষ্টা করছে এ করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার।
ঠিক তেমনই নাটোরে পান বিক্রেতা আকাশ বিবেকের তারনায় প্রতিনিয়ত দিন রাত স্বেচ্ছায় নিজের পকেটের অর্থ খরচ করে নাটোর শহরের প্রতিটি জায়গায় প্রত্যেকদিনই জীবাণুনাশক স্প্রে এবং সতর্কতামূলক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আকাশ বলেন, মানুষ মানুষের জন্য আজ একজনের বিপদ কাল তো আমারও বিপদ হতে পারে। আবার এই বিপদ কালীন সময়ে যদি কিছু করতে পারি তবে জীবন সার্থক হবে। আমি একজন পান বিক্রেতা সত্যি কিন্তু আমার মনের মধ্যে সাড়া দিয়েছে আমারও কিছু করা উচিত। আমিও বিবেকের দ্বারা দংশিত হয়েছি তাই নিজ উদ্যোগে প্রতিদিন প্রায় ৪০ থেকে ৫০ লিটার এর মত জীবাণুনাশক স্প্রে করছি নাটোর শহরের প্রতিটি জায়গায় আনাচে-কানাচে। সাইকেলের সাথে সাউন্ড বক্স লাগিয়ে সাথে চলছে করোনা প্রতিরোধ মূলক সাস্থ্য সচেতনতা।
আকাশ নাটোর চাইপাড়া এলাকার বাসিন্দা। স্ত্রীসহ মোট পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৬ জন। পরিবারেত অবস্থা ভাল নয়। কোভিট ১৯ এর প্রকোপ শুরু হওয়ার সাথে সাথে আকাশ চিনের একটি কোম্পানির কাছ থেকে বেশ কিছু জীবাণু নাশক আর মাস্ক, গ্লোভস ইত্যাদি কিনে বিক্রি করতে শুরু করে এবং সেখান থেকে ১ তৃতীয়াংশ লভ্যাংশ দিয়ে জীবানু নাশক স্প্রে এবং সচেতনতা মূলক প্রচারনার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সাইকেল নিয়ে শহরে আনাচে কানাচে কাজ করে চলেছেন আকাশ। পকেটের টাকা খরচ করে চলেছে তার কার্যক্রম।
নাটোর রাজবাড়ীতে রংগীলা পানের দোকান নামে একটি পানের দোকান ছিল। কিন্ত করোনায় তার ব্যবসা বন্ধ থাকায় তিনি কর্মহীন। তাই সিদ্ধান্ত নেন দেশর মানুষের পাশে একটু দাড়াতে হবেন।
আকাশ আরো বলেন `আমি যদি কোন প্রকার সুযোগ সহযোগিতা পাই তবে ৫০ জনের একটি ভলান্টিয়ার গ্রুপ করে সরকারি আদেশ অনুযায়ী সাধ্যমত করোনার বিরুধ্যে লাড়াই করবো। আকাশ প্রতিদিন হাসপাতালে গিয়ে রুগীদের খোজ খবর নেন।
সমাজের সকল শেনী পেশার ব্যাক্তি বর্গ তার এই মহতী উদ্যোকে ধন্যবাদ প্রকাশ করেছেন। প্রকৃত পক্ষে এই রকম আকাশের কাছ থেকে আমাদের শেখার অনেক কিছু আছে। সমাজে বিত্তবান বা সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেরই সাধ্য থাকেলেও এগিয়ে আসছে না এই দূর্যোগের সময়। কিন্ত দেখা যাচ্ছে অনেকেই হত দরিদ্র। তারা সমাজের সেবার জন্য নিজের সবটুকু বিলিয়ে দিচ্ছে। জীবনের সূর্য অস্তমিত হওয়ার সময় কেউ কিছু নিয়ে যেতে পারবে না। তাই মানবাতার সেবায় নিজেকে উজার করে দেওয়াই আকাশের ধর্ম।
আসুন দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে যে যার যায়গা থেকে সাধ্যমত কিছু করি এই সমাজের জন্যে। আলোকিত সূর্য্য আবার উঠবে কেটে যাবে অন্ধকার। আমাদের উচিৎ আকাশের মত হাজারো আকাশ কে স্যালুট জানানো এবং সহোযোগিতায় হাত বারিয়ে দেয়া। তবেই মানবতার জয় হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button