রংপুর বিভাগসারাদেশ

কুড়িগ্রামে গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ চাষে তিন বন্ধুর সাফল্য

 কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি।। কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিন বন্ধু মিলে প্রথমবারের মতো গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ চাষ করে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছেন। উপজেলার মধ্যে এবারেই প্রথম নতুন জাতের এই তরমুজ চাষে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। তরুণ উদ্যোক্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, করোনার কারণে কলেজ বন্ধ। অন্য শিক্ষার্থীদের মতো অনেকদিন ধরে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন রাজারহাট উপজেলার অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তিন বন্ধু মাহমুদুল হাসান, নুর আলম সরকার এবং মনিরুল ইসলাম। তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে কিছু সময় কৃষি কাজে ব্যয় করবেন তারা। কী করা যায় চিন্তা ভাবনার একপর্যায়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে নতুন জাতের গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ সম্পর্কে জানতে পারেন। পরে তিনজনে মিলে গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ চাষের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
পরে তারা রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন হরিশ্বর তালুক মৌজায় ৪০ শতাংশ জমি লিজ গ্রহণ করে। পরে ইউটিউবে গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ চাষের পদ্ধতি দেখে ইন্টারনেটের দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী তরমুজের বীজ অর্ডার করেন। এরপর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতা নিয়ে তারা হলুদ বর্ণের তরমুজ চাষ করেন।
শুরু থেকে মাত্র ৬০ দিনের মধ্যে ফলন হয় এই তরমুজের। বর্তমানে তরমুজ ক্ষেতের জাংলায় ঝুলছে শত শত গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ। নতুন জাতের সেই তরমুজ ও চাষের পদ্ধতি জানার জন্য প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে উৎসুক জনতা এসে ভিড় করছেন তরমুজ ক্ষেতে।
গত দু’দিন পূর্বে প্রথম পর্যায়ে তরমুজ কর্তন করেন তরুন চাষীরা। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরে তাসনিম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শম্পা আক্তার, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জুয়েল, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আশিকুর ইসলাম সাবু, রাজারহাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্র তরুণ উদ্যোক্তা নুর আলম সরকার বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে প্ল্যান পরিবারের অর্থনৈতিক সচ্ছলতার জন্য কিছু করা দরকার। সেই চিন্তাভাবনা থেকে ভাবলাম যদি কৃষিতে ভালো প্রযুক্তি আনা যায় অনেক ভালো ফলন পাওয়া যাবে এবং উন্নত ফসলগুলো করা যাবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষামূলকভাবে আমরা তরমুজ চাষ করি।
অপর তরুণ উদ্যোক্তা মাহবুবুল হাসান বলেন, আমরা তিন বন্ধু মিলে গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ চাষাবাদ করেছি এবং আশানুরূপ সাফল্য অর্জন করছি। আমাদের পরবর্তী প্রজেক্টে আরও ভালো কিছু করব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শম্পা বেগম বলেন, এটা জাত হলো গোল্ডেন ক্রাউন, পুষ্টিমান এবং স্বাধে মিষ্টতায় এটা বাজারের অন্যান্য তরমুজের থেকে দ্বিগুণ স্বাধ বিশিষ্ট। ইউটিউব ভিডিও ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শ নিয়ে তারা গোল্ডেন ক্রাউন নামক তরমুজ চাষ করেছেন। প্রথমবারে তারা ৪০ শতক জমিতে চাষাবাদ করে আশানুরূপ ফলন পেয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরে তাসনিম জানান, রাজারহাট উপজেলায় প্রথমবারের মতো তিনজন তরুণ উদ্যোক্তার উদ্যোগে গোল্ডেন ক্রাউন জাতের তরমুজ চাষাবাদ হয়েছে। আমরা সরেজমিনে তাদের প্রথম হারভিষ্টিংয়ে সামিল হয়েছি। এখানে উৎপাদন যথেষ্ট ভালো হয়েছে এবং এলাকার মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। স্থানীয় বাজারেও এটার যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। সকলের মতামত হচ্ছে এটা যথেষ্ট স্বাদ এবং পুষ্টিযুক্ত একটি ফল। আমরা আশা করছি এই তরুণ তিন উদ্যোক্তার পথ অনুসরণ করে অন্যরাও এগিয়ে আসবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button