রংপুর বিভাগসারাদেশ

কুড়িগ্রামে উদযাপিত হচ্ছে বীণাপানি বন্দনা

কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি: প্রতিবছরের মতো জ্ঞানের আলো ছড়াতে আবারও এসেছেন জ্ঞান,বুদ্ধি, বিদ্যা ,শিল্পকলা ও সংগীতের দেবী সরস্বতী।দেবী সরস্বতী হলেন সত্য,শুদ্ধ ও শুভ্রতার প্রতিক । এ দেবীর আরেক নাম বীণাপানি । রাঁজহংস এ দেবীর বাহন ।দেবী সরস্বতীর হাতে শ্বেত রুদ্রাক্ষের মালা, তিনি শ্বেতচন্দনে চর্চিতা, শ্বেতবাণীধারিণী, শুভ্রবর্ণা ও শ্বেত অলঙ্কারে ভূষিতা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস এদিনে সরস্বতী বিদ্যার দেবী পৃথিবীতে আসেন অন্ধকার দুর করে জ্ঞানের আলো ছড়াতে । শিক্ষার্থীরা এ দিন বিশেষভাবে পূজা করেন দেবী সরস্বতীর। দেবী সরস্বতীকে কেউ কেউ বাগ্বদেবী হিসেবেও জানেন অর্থ্যাৎ সনাতন শিশুদের ৫ বছর হলেই এ দেবীর পায়ে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে চক আর স্লেটে অ,আ, ক,খ নিজ হাতে লিখে শুরু হয় শিক্ষা জীবনের ।যাকে বলা হয় হাতেখড়ি ।
মঙ্গলবার(১৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টা ৪৫ মিনিটে  শুরু হয় মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথি যা সরস্বতী বন্দনার জন্য প্রসিদ্ধ । সকাল থেকে কুড়িগ্রামের মন্দির,অস্থায়ী পুজো মন্ডপ,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর বাড়িতে বাড়িতে চলছে দেবী বিণাপাণির বন্দনা ।
এবার করোনা মহামারী থাকার কারণে পুজো মন্ডপ ও মন্দির গুলোতে সকালে ভিড় কম দেখা গেলেও প্রত্যেকে মানছেন স্বাস্থ্যবিধি ।
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ এর শিক্ষার্থী কল্লোল রায় জানান,আমাদের কলেজে স্বাস্থ্যবিধি মেনে  সকালে পুজো হয়েছে । এখন আমাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে ।
মোল্লাপাড়া পূজা মন্ডপের সদস্য দীপ্ত সাহা বলেন,”আমরা বন্ধুরা মিলে চাঁদা তুলে পূজা করছি এখানে,অনেক ভালো লাগছে।”
সনাতন শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে,মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা আয়োজিত হয়। তিথিটি শ্রীপঞ্চমী বা বসন্ত পঞ্চমী নামেও পরিচিত। শাস্ত্র মতে, এদিন দেবীর কাছে বিদ্যার অর্জনের প্রার্থনা করে ভক্তরা। পূজার সময় ভক্তরা প্রিয় দেবীর শ্রীচরণে অঞ্জলি প্রদান করে থাকেন।
এছাড়া পুরোহিতের মন্ত্র পড়ার সাথে সাথে উপস্থিত ভক্তরাও সে মন্ত্র মনে মনে পাঠ করতে থাকেন এবং দেবীকে স্মরণ করেন। শাস্ত্রীয় মতে আরো জানা যায়, শ্রীপঞ্চমীর দিন সকালেই সরস্বতী পূজা সম্পন্ন করা যায়। সরস্বতীর পূজা সাধারণ পূজার নিয়মেই হয়।
তবে এতে কয়েকটি সামগ্রীর প্রয়োজন হয়। এরমধ্যে অভ্র- আবীর, আমের মুকূল, দোয়াত- কলম,পলাশ ফুল ও যবের শীষ এবং বাসন্তী রঙের গাঁদা ফুল অন্যতম। লোকাচার অনুসারে এদিন ছাত্রছাত্রীরা পূজার আগে কুল বড়ই খান না। পূজার দিন কিছু লেখা এবং বই পড়াও নিষিদ্ধ। পূজার পর লক্ষ্মী, নারায়ণ, লেখনী-মস্যাধার (দোয়াত-কলম), পুস্তক ও বাদ্যযন্ত্রের পূজা করার প্রথা প্রচলিত রয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button