রংপুর বিভাগসারাদেশ

কুড়িগ্রামে জেগে ওঠা চরে আলু চাষে ব্যস্ত কৃষক

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিস্তার জেগে ওঠা চরের জমিতে আগাম আলু চাষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কৃষকরা। তিস্তা নদী পানি কমে জেগেছে ধুধু চর আর সেই চরের জমিতে আলু চাষ করে লাভবান হওয়ার আশায় এবারও আগাম আলু চাষের জন্য জমি প্রস্তুতের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিস্তার চর এলাকার প্রতিটি কৃষকরা।
চলতি বছরে কার্তিক মাসের শেষের দিকে এই উপজেলায় দেখা মিলেছে শীতের শীতল হাওয়া।
উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চর গাবুর হেলান, পাড়া মৌলা, রতি, হায়বত খার চর, শিয়াল খাওয়ার চর, তৈয়বখার চর, রামহরি মন্দির, ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের বুড়ির হাটের চর, খিতাব খাঁর চর, নাজিমখা ইউনিয়নের চর রতিদেব ও ছিনাই ইউনিয়নের কালুয়ার চর সহ কয়েক গ্রামে দেখা গেছে কৃষকরা আলু চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
ঘড়িয়াল ইউনিয়নের খিতাব খা চরের শহিদার রহমান বলেন, বাজারে যার আলু যত আগে উঠবে তার লাভ তত বেশী।
এবার আবহাওয়া অনুকূলে বীজের দাম বেশি চল্লিশ কেজির আলুর বীজ বস্তা ২ হাজার ৪০০ টাকা এবং প্রয়োজনীয় সারের দাম বস্তা প্রতি ৫০ টাকা বেশি হলেও সরবরাহ রয়েছে স্বাভাবিক।
খিতাব গ্রামের আলুচাষী আইনুদ্দিন জানান, এক একর জমিতে আলু চাষের প্রস্তুতি নিয়েছি এবং কিছু জমিতে আলুর বীজ রোপন করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে আলু চাষের খরচ হচ্ছে- ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা।
তিস্তার চরে বর্গা চাষী দুলাল হোসেন জানানা, আড়াই এককর জমি এক লাখ টাকায় বর্গা নিয়েছি পানি থেকে পানি পর্যন্ত।
আলু চাষে একর প্রতি খরচ হবে এক লক্ষ থেকে এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা আলুর বাজার ভালো হলে একর প্রতি মুনাফা হবে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। আলু বিক্রি করে যাহা লাভ হয় তা দিয়ে জমিতে বাদাম লাগাই আর আরাই এককর জমিতে বাদাম হবে ৫০ মণ যার বাজার মূল্যে এক লাখ হবে যার অধিকাংশ হবে মুনাফা।
বর্তমানে আলুর গাছের পাতায় ধরেছে ল্যাদা পোকা যাহা আলুর গাছের গোড়া কেটে দেয় চিকিৎসার জন্য কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে রেলোথিন,ক্যারাতে এই ধরনের ঔষুধ ব্যবহার করি।স্থানী সার ও বীজ ব্যবসায়ী বাবু ট্রেডার্স এর মালিক আব্দুস ছাত্তার মন্ডল বাবু জানান রোগ নির্ণয় করে ঔষুধ দিয়ে থাকি চাষীদের মাঝে।
প্রতি বিঘা জমিতে আলু উৎপাদন হবে ১৩০ থেকে১৪৫ মন। বাজারে আগে আলু তুলতে পারলে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হবে ২৫থেকে ৩০ টাকা। এতে বিঘা প্রতি আলু বিক্রি করে খরচ বাদে লাভ পাওয়া যাবে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা এমনিকি আলু লাভ কম হলে বাদাম চাষে মুনাফা আসে অনেক বেশি।
ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ কর্মকার জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষনিক কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করে যাচ্ছেন এছাড়াও আওয়ামীলীগ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রয়োজনমত প্রণোদনা দিয়ে কৃষকদের পাশে আছে ফলে কৃষকরা ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত হচ্ছে।
রাজারহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সম্পা আকতার জানান, এবার ২২শ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।অধিক লাভের আশায় কৃষকরা আগাম জাতের আলু আবাদে নেমে পড়েছে। আগামী ডিসেম্বরের শেষ হইতে জানুয়ারী মাসে এই আলু বাজারে পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করছেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button