রংপুর বিভাগসারাদেশ

কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর ভাঙ্গন রোধে কার্যকর ব্যবস্থার দাবীতে মানববন্ধন

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর ভাঙ্গন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। বুধবার সকালে কুড়িগ্রাম জেলার অন্তর্গত রাজারহাট উপজেলার ১নংঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের নাখেন্দা, গতিয়াম, খিতাবখা গ্রামে তিস্তা নদীর তীরে শত শত এলাকাবাসী এই মানব বন্ধনে অংশ নেয়। উল্লেখ যে ১নং ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের নাখেন্দা, গতিয়াম, খিতাবখা গ্রাম তিনটি তিস্তা ব্রিজ থেকে ২ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। এই গ্রাম তিনটিতে প্রায় ২৫০০ পরিবারের বসবাস ।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ১নংঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো: শহিদুল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম, এবং নৌবাহিনীতে কর্মরত মোঃ হোসেন আলী  প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত কয়েক বছরে তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে ১নং ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের নাখেন্দা, গতিয়াম, খিতাবখা গ্রামের প্রায় ৭০০ শতাধিক ঘর-বাড়ি ও শত শত হেক্টর আবাদী জমি, গতিয়াশাম কমিউনিটি ক্লিনিক, খিতাব খা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোঃ আঃ রশিদের বাড়ি, একটি মসজিদ, ইদগা মাঠ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। একেকটি পরিবার দুই তিন বার নদী ভাঙ্গনের সম্মুখীন হয়েছে। অনেকেই অন্য জেলায় স্থানান্তরিত হয়েছেন। আবার আনেকেই অস্থায়ী ভাবে অন্যের জমি, অন্যের বাড়ির উঠানে, সরকারি বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।

বর্ষা শেষে নদীর পানি কমতে শুরু করার ফলে আবার নতুন করে তীব্র নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে চর গোকুন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর গোকুন্ডা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং বিদ্যালয়টির চার তলা নির্মাণাধীন ভবন, নাখেন্দা ইদ্গা মাঠ(১৪ টি মসজিদের মুসুল্লিদের মাঠ), বগুড়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৬০০ থেকে ৭০০ পরিবার নতুন করে ভাঙ্গনের সম্মুখীন হচ্ছে । উল্লেখ যে গ্রাম তিনটি ২০১৮ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শতভাগ বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের আওতায় বিদ্যুতায়িত হয়। ইতিমধ্যে তিনটি বিদ্যুতের খুঁটি নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। পুনঃ পুনঃ বন্যা, অতি বৃষ্টির ফলে আমন ধানের ক্ষতি ও নদী ভাঙ্গনের ফলে গ্রাম তিনটির খেটে খাওয়া শ্রমিক,কৃষক মানুষগুলো দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কার কাছে গেলে এই বিপদ থেকে তারা মুক্তি পাবে তাদের জানা নাই। রাজারহাট উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ নূরে তাসনিম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে নদী ভাঙ্গন জাতীয় ইস্যু বলে এড়িয়ে যান। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড এর কর্মকর্তাদের সাথে যোগযোগ করা হলে তারা বলেন এখন টাকা নেই। এ বছরের বরাদ্দের টাকা হিসেব শেষে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

জনপ্রতিনিধিরা এই সব এলাকার কোন খোঁজ রাখেন না। সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা এসে দেখে যান কিন্তু কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন না। পদক্ষেপ হিসেবে দুই বছর আগে লোক দেখানো কয়েকশ জিও ব্যাগ পানিতে ফেলেছিলেন।
মানব বন্ধনে এলাকাবাসীর নদী ভাঙ্গন রোধকল্পে  নদীর তীর বাঁধাই ও ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের জোর দাবী জানিয়েছেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button