সারাদেশ

খানসামায় দুটি সংগঠনের উদ্যোগে অসহায়দের মাঝে মাসব্যাপী খাদ্য বিতরণ

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের খানসামায় করোনা সংকটে রোজদারের বাড়িতে প্রতিদিন ইফতার ও রাতের খাবার পৌঁছে দিচ্ছে স্থানীয় তেবাড়িয়া সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড সদস্যরা। ‘সাপোর্ট বাংলাদেশ’ ও ‘ইউনাইটেড খানসামা’ নামে দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং স্থানীয়দের আর্থিক সহযোগিতায় তারা এসব খাদ্য বিতরণ করছেন।
চলমান লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া লোকদের মধ্যে উপজেলার আলোকঝাড়ি, ভেড়ভেড়ী ও আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের ১০টি গ্রামে প্রতিদিন গড়ে দুশ’ ৫০টি পরিবারে খাবার দেয়া হচ্ছে সংগঠনের পক্ষে। সখিনা-ফজলুল হক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের একটি ঘরে রান্না করা এসব ইফতার ও রাতের খাবার বয়স্ক, বিধবা ও অসহায়-গরীব পরিবারে গিয়ে পৌঁছে দিচ্ছেন নিয়োজিত ভলান্টিয়ারগণ।
ঢাকায় কর্মরত খানসামাবাসীদের সংগঠন ‘ইউনাইটেড খানসামা’র পক্ষে সভাপতি সাবেক জেলা দায়রা জজ মো. আশিকুর রহমান ও ‘সাপোর্ট বাংলাদেশ’র পক্ষে এডমিন মাসুম রহমান সহ স্থানীয় ব্যক্তিদের আর্থিক সহযোগিতায় এসব খাদ্য সহায়তায় প্রতিদিন দেয়া হচ্ছে।
কথা হয়, তেবাড়িয়া গ্রামের সত্তুরোর্ধ খয়ের উদ্দিন, কাজীপাড়ার কাছিরন বেগম, বানিয়াপাড়ার আব্দুর রশিদ ও লুথু মিয়া এবং হাফিজ মেম্বারপাড়ার পঞ্চাশোর্ধ জফুর আলী’র সাথে। কাছিরন বেগম বলেন, হামরা খুব খুশি হছি বা। সব সময় ভালো-মন্দ জোগার করির পারি না। খয়ের উদ্দিন ও জফুর আলী বলেন, অসুখের জন্য কাম-কামাই নাই। সুমুতির ছেলেরা হামাক ইফতার দেয় খাবার দেয়। হামরা সেগুলা সিহিরিতেও খাই। দোয়া করি, আল্লাহ ওমার ভালো করুক।
সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে অসহায়দের হাতে খাদ্য প্রদানের দায়িত্বরত প্রধান সমন্বয়ক এড. সোয়েব হোসাইন সিজু বলেন, রমজানের প্রথম দিন থেকে ইফতার সামগ্রীতে ভাত, মাংস, ডিম ও সবজি দিচ্ছি। মাঝে মধ্যে গরু এবং মুরগির মাংসের ভূনা খিচুরি দেয়া হচ্ছে। খাদ্য সামগ্রীতে পুষ্টিমান ঠিক রাখতে আমরা প্রতিদিন নিজ হাতে রান্না করছি। সংগঠনের ভলান্টিয়ার এবং স্থানীয় ভলান্টিয়ার দিয়ে বাড়িতে পৌঁছাচ্ছি। আশা রাখি পুরো রমজান এটা বজায় থাকবে এবং পর্যায়ক্রমে সবকটা ইউনিয়নে দেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম জানান, আমি তাদের রান্নার আয়োজন দেখেছি। মাসব্যাপী কর্মসূচি। এটা তো অসাধারণ উদ্যোগ। আমি তাদের সাধুবাদ জানাই। তারা অসহায়দের পাশে আছে, এ লোকগুলো বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে। সরকারের পাশাপাশি তারা যে খাবার দিচ্ছে, এটা একটা বড় পরিচয় দিচ্ছে। তাদের কাজ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেক বিত্তবান ও সচেতন মানুষ এ উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে। তাহলে আমাদের ক্রান্তি লগ্নে দুস্থদের খাদ্য সমস্যার সমাধান হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button