রাজশাহী বিভাগসারাদেশ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ধর্ষণের সালিশ ,ক্ষোভে ছাত্রীর আত্মহত্যা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকায় ধর্ষিত শিশুর পিতার অনুপস্থিতিতে একটি ধর্ষণ মামলা ৭২ হাজার টাকায় সালিশের নামে বিচারের মাধ্যমে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

মৃত শিশুটির পরিবারের অভিযোগ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড সদস্য মতিউর রহমান মটন মিয়ার নিজ বাসায় জোরপূর্বক ধর্ষণের জেরে অনুষ্ঠিত হওয়া সালিসে মেয়ের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭২ হাজার টাকায় সমাধান করে দেন। আর এ বিষয়টিকে নিজের জন্য অপমানজনক ভেবে মানতে না পেরে ক্ষোভে শুক্রবার বিষ পানে আত্মহত্যা করে পৌর এলাকার দ্বারিয়াপুর মহাজনপাড়া মহল্লার ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী (১৩)।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে বিষ পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে পরিবারের লোকজন চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায় শিশুটি।
শিশুটির পরিবার জানায়, কয়েকদিন আগে একই এলাকার তহিদুল ইসলামের ছেলে আব্দুল বাসির চাচাতো বোন আসিফার ঘরে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। মেয়ের চিৎকারে আসিফার মা ঘরের দরজা আটকে দেয়। আটক থাকা অবস্থায় ধর্ষক বাসিরের বাবা তহিদুলের বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। পরে গত দুই দিন আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড সদস্য মতিউর রহমান মটন মিয়ার উদ্যোগে তার নিজ বাসায় উভয় পক্ষকে নিয়ে সালিসে বসেন। অনুষ্ঠিত সালিসে ধর্ষক বাসিরকে ৭২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সালিসে কাউন্সিলর মতিউর রহমান মটন মিয়াসহ আরো উপস্থিত ছিলেন দুই পরিবারের সদস্যরা।
নিহত আসিফার বড় বোন বলেন, ৭২ হাজার টাকায় ধর্ষণের সমাধান মানতে না পেরে সালিসেই তার মেয়ে সাফ জানিয়ে দেয় এ বিচার মানিনা। এসময় আসিফা সকলের উপস্থিতিতে বলে, আমাকে বাসির ধর্ষণ করেছে। আমি তাকেই বিয়ে করবো, টাকা নিবো না।

এবিষয়ে কথা বলতে হাসপাতালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড সদস্য মতিউর রহমান মটন মিয়ার সাক্ষাৎ পাওয়া গেলেও তিনি কোন কথা বলতে নারাজ। এমনকি প্রতিবেদকের ফোন পাওয়ার পর মুঠোফোন বন্ধ করে দেন মটন মিয়া।
এদিকে শনিবার দুপুরে হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এবিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানায়, পরিবারের পক্ষ হতে নারী নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এবিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button