জুয়া ও মাদকের আড্ডা সৈয়দপুর রেলওয়ে মাঠ
নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুর পুলিশ স্টেশনের সামনে মাত্র ২’শ গজের মধ্যে রেলওয়ে মাঠে সন্ধা হলেই মাদকসেবীদের জমজমাজট আড্ডা বসে। অনেকে দলবন্ধ হয়ে আড্ডার ফাঁকে আবার কেউ কেউ গানের তালে তালে গাঁজা সেবন করে। এর পাশাপাশি দিনে-রাতে চলে জুয়ার আসরও। পুলিশের কিছু অসাধু সদস্য এখান থেকে নিয়মিত মাসোয়ারা নেন বলে অভিযোগ অনেকের। তাই কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না এ আড্ডা। ফলে নষ্ট হচ্ছে খেলাধুলার পরিবেশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রেলওয়ে বিভাগীয় শহরের এ মাঠে কতৃপক্ষ বিজয় ও স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান করে থাকে। এছাড়া রেলওয়ের বিভাগীয় পর্যায়ে ফুটবল, ভলিবলসহ নানা ধরনের খেলা আয়োজন করা হয় এ মাঠে। বিকেলে নানা বয়সী ছেলেরা ফুটবল ও ক্রিকেট, ভলিবলসহ বিভিন্ন ধরনের খেলার অনুশলীন করে থাকে এখানে। কেন্দ্রীয় ঈদগাহ হিসেবে এখানে বছরের দুটি ঈদের জামায়াতও অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু শহরবাসীর জন্য গুরুত্বপূর্ন এ মাঠ এখন জুয়ারি ও মাদকসেবীদের দখলে চলে গেছে। সরেজমিনে মাঠের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই দেখা যায়, তরুণদের একাধিক গ্রুপ প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন করছে। কেউ গাঁজার স্টিক বানিয়ে দিচ্ছে, কেউ সেবন করছে। মাঠের পশ্চিম কোণে ১৫ থেকে ২০ জন মাটিতে দাগ কেটে জুয়া খেলছে।
জানা যায়, মাঠে মাদক সরবরাহ করে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই তাদের টার্গেট। টোকাই ও হকারদের মাধ্যমে তারা সেবনকারীদের হাতে মাদক পৌঁছে দেয়। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে এসে মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে অনেকে। একপর্যায়ে নিয়মিত সেবন করতে হয়। এছাড়া জনৈক সেলিম নামের এক ব্যক্তির নিয়ন্ত্রনে এ মাঠে নিয়মিত জুয়ার আসর বসছে। প্রতিদিন এখানে লক্ষ লক্ষ টাকার জুয়া খেলা হয়ে থাকে। শহরের গার্ডপাড়া এলাকার ক্রিকেটার আরশাদ বলেন, জুয়ারি ও মাদকসেবীদের কারণে এখানকার পরিবেশ বাজে হয়েছে। তাই এখানে প্রাকটিস বন্ধ করে দিয়েছি।
সৈয়দপুর রেলওয়ের বিভাগীয় কর্মকর্তা (কারখানা ) জয়দুল ইসলাম বলেন, আমার পক্ষে এটা সমাধান করা সম্ভব নয়। এর একমাত্র সমাধান করতে পারে পুলিশ। সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসনাত খান বলেন, এ মাঠে জুয়া কিংবা মাদক সেবনের বিষয়টি তার আগে জানা ছিল না। সেখানকার মাদকসেবী ও জুয়ারিদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করা হবে। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে জানান, যদি তার থানার কোন পুলিশ সদস্য মাসোয়ারা নিয়ে থাকে তবে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।