রৌমারীর ঘরে ঘরে বানের পানি, দুর্ভোগ বানভাসি মানুষের
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা অব্যাহত পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের রৌমারীতে দ্বিতীয় দফা বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ৬ ইউনিয়নের মানুষ। দু’দফা বন্যায় উপজেলা চত্তর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ি, মাঠঘাট বন্যার পানিতে একাকার হয়ে পড়ায় গবাদি পশুসহ সর্বক্ষেত্রেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন বানভাসি মানুষজন।
অধিকাংশ টিউবওয়েল পানিতে নিমজ্জিত হওয়াসহ স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় পেটের পীড়া ও পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের উপসর্গ দেখা দিয়েছে বানভাসি এলাকায়।
এদিকে পরপর দু’দফা বন্যায় গ্রামীণ সবক’টি ভাঙ্গাচূড়া সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে সকল ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ আবারও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এ ছাড়া আমনের বীজতলা, সবজি খেত, পাটক্ষেত ও মাছের খামারগুলো প্রথম দফা বন্যায় বিনষ্ট হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন অনেক কৃষক। তবুও ক্ষান্ত হননি কৃষিজীবী ও মৎস্যজীবী পরিবারগুলো। বুকভরা আশা উদ্দীপনা নিয়ে ভেসে যাওয়া পুকুরগুলোতে আবারও মাছের পোনা ছাড়েন খামারিরা, বিনষ্ট হওয়া বীজতলায় তড়িঘড়ি করে আবারও বীজ বুনেন কৃষকরা। কিন্তু বিধি বাম! দ্বিতীয় দফা বন্যায় সবকিছু আবারও ভেস্তে যাওয়ায় বিশেষত চড়া সুদে ঋণ গ্রহিতারা এখন চোখে সর্ষেফুল দেখছেন তারা।
এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত আজ শুক্রবার (১৭ জুলাই) কিছুটা বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও এখনও উপজেলার অধিকাংশ এলাকার বাড়িঘরে হাটু ও কোমর পানি লেগে আছে। অনেক পরিবারের উঁনুনে হাড়িই বসছেনা। ঢলের তোড়ে অনেক ঘরদরজা ধসে গিয়ে পানিতে ভেসে গেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরান বলেন, বন্যা মোকাবেলায় সার্বক্ষণিক মনিটরিংসহ কন্ট্রোলরুম খোলা রয়েছে। বন্যাকবিলত এলাকা পরিদর্শন ছাড়াও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ বানভাসিদের মাঝে শুকনো খাবার প্যাক বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
প্রথম দফা বন্যার রেশ কেটে উঠার আগেই সপ্তাহকালের ব্যবধানে ফের বন্যা শুরু। এবারের বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়েছে। তবে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ত্রাণ বিতরণসহ আমাদের সকল তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলেও তিনি জানান।