জাতীয়

চিরনিদ্রায় এন্ড্রু কিশোর

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বরেণ্য সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। আজ বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারসংলগ্ন খ্রিস্টানদের কবরস্থানে মা-বাবার পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান।

জায়েদ খান বলেন, ‘দুপুর পৌনে ১২টায় এন্ড্রু কিশোরের মরদেহ সমাহিত করা হয়। তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মা-বাবার পাশে সমাহিত করা হয়েছে। শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে আমরা কয়েকজন এসেছি দেশবরেণ্য এই শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে।’

এর আগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোরের শেষকৃত্য অনুষ্ঠান শেষে শ্রদ্ধা নিবেদন সম্পন্ন হয়েছে। আজ বুধবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘর থেকে তাঁর মরদেহ নগরীর শ্রীরামপুর এলাকায় রাজশাহী সিটি চার্চে নেওয়া হয়।

সেখানে ধর্মীয় আচার শেষে ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের শ্রদ্ধা নিবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়। চার্চ প্রাঙ্গণে সকাল পৌনে ১০টা থেকে শিল্পীর কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু করেন তাঁর ভক্তরা। তবে করোনাভাইরাসের কারণে সবকিছুই সীমিত পরিসরে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে করা হয়। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বেলা ১১টার দিকে এন্ড্রু কিশোরের মরদেহ নেওয়া হয় রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারসংলগ্ন খ্রিস্টানদের কবরস্থানে।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে খ্রিস্টিয়ান কবরস্থানে শায়িত হয়েছেন এন্ড্রু কিশোর। কবরস্থানে ঢুকেই বাঁ পাশের একটি স্থান তাঁর পছন্দ। জায়গাটি তিনি আগেই দেখিয়ে দিয়ে গেছেন। এই কবরস্থানেই সমাহিত হয়েছেন শিল্পীর বাবা ক্ষীতিশ চন্দ্র বাড়ৈ ও মা মিনু বাড়ৈ।

রাজশাহীতে জন্ম নেওয়া এন্ড্রু কিশোর প্রায় ১৫ হাজার গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। তাঁকে বলা হয় ‘প্লেব্যাক সম্রাট’। আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এই শিল্পী ক্যানসারে ভুগছিলেন। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সিঙ্গাপুরেই ছিলেন চিকিৎসার জন্য। কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি চিকিৎসার পরও দ্বিতীয় দফায় তাঁর দেহে ক্যানসার বাসা বাঁধে। ফলে চিকিৎসকরা হাল ছেড়ে দেন।

তাই শিল্পীর ইচ্ছায় তাঁকে দেশে আনা হয় গত ১১ জুন। এরপর ২০ জুলাই থেকে রাজশাহীতে তিনি বোনের বাসায় ছিলেন। গত ৬ জুলাই সন্ধ্যায় এখানেই উপমহাদেশের এই কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

এন্ড্রু কিশোরকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মরদেহ রাখার কথা ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনার ও রাজশাহী কলেজ চত্বরে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটি হয়নি। তাই ভক্তদের শ্রদ্ধা জানাতে এই সুরসম্রাটকে সমাধিস্থ করার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় একসঙ্গে মোমবাতি প্রজ্বালনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

ওস্তাদ আবদুল আজিজ বাচ্চু স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান খোকন এই কর্মসূচির কথা জানান। শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মোমবাতি প্রজ্বালনের আহ্বান জানিয়েছে রাজশাহী সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটও।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক দীলিপ কুমার ঘোষ জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে বড় আয়োজনে এই কিংবদন্তিকে শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ নেই। তাই মোমবাতি প্রজ্বালনের মাধ্যমে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। দেশবাসীকেও তিনি এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button