রাজশাহী বিভাগসারাদেশ

ধামইরহাটের জাতীয় উদ্যান আলতাদিঘীর বাদাম দোকানী আইয়ুব এর মানবেতর জীবন যাপন

ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর ধামইরহাটের ঐতিহাসিক ২০০ বছরের পুরনো শালবাগান ও আলতাদিঘী জাতীয় উদ্যানে  এ সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আশা পর্যটকদের পদচারনায় মুখর থাকত। দর্শনার্থীদের হই-চইয়ে প্রান চাঞ্চল হয়ে উঠত এ এলাকার পরিবেশ। সেই পরিবেশে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি দোকান চালিয়ে সংসারের চাহিদা মিটাতো। বর্তমান করোনাভাইরাসের প্রক্ষোভ বেড়ে যাওয়ায় সর্বত্র লক ডাউন ও দর্শনীয় স্থানগুলো বন্ধ থাকায় প্রভাব পড়েছে জাতীয় উদ্যান এলাকায় অবস্থিত দোকান-পাটে। দর্শনার্থীদের আগমন ছাড়া কোন কোন দোকানে সারা দিনে এক টাকাও বেচা-বিক্রি করতে পারে না। বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক দোকান মালিক এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এমনি এক দৃষ্টি প্রতিবন্দি বাদাম ওয়ালা নাম আইয়ুব হোসেন। দিঘীর উত্তর পাড়ে ছোট একটি মাচংগে ৫-৭ পেকেট পটেটুজ, এক কেজি বাদাম ও হাফ কেজি ভাজা বুট নিয়ে চলে জীবন সংগ্রাম। অধির আগ্রহে বসে থাকে কখন একটি কাষ্টমার এসে ১০ টাকার বাদাম কিনবে। এভাবে ১০টাকা ৫ টাকা বিক্রি করে সারা দিনে ভরপুর দর্শনাথীদের আগমন থাকলে সারা দিনে ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা বিক্রি হয়ে থাকে। ওই থেকে যত টুকু টাকা লাভ হয় সে টাকা দিয়ে চাল ডাল কিনে স্ত্রী সন্তান নিয়ে কোন মতে দিন যাপন করেন। কিন্তু কাল হয়ে দাড়িয়েছে আইয়ুব হোসেনের সম্প্রতি করোনার জন্য দর্শনীয় স্থান গুলো বন্ধ থাকায়। দোকান নিয়ে বসলেও পর্যটক না থাকায় সারা দিনে দোকানে বিক্রি হয় ৪০-৪৫ টাকা ফলে আইয়ুব হোসেন স্ত্রী সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। আইয়ুব হোসেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধর কারণে বাড়ি থেকে দোকানে যেতে হয় স্ত্রী অথবা ছোট একটি কণ্যার হাত ধরে। সেই মাচংগে সকালে বসে রেখে চলে যায় আবার সন্ধ্যায় তারা এসে আমাকে হাত ধরে বাড়ি নিয়ে আসে এটাই আমার বর্তমান জীবন। আইয়ুর হোসেন এ প্রতিবেদক কে জানান,  আমার মুল্যবান চোখ দুটি আজ থেকে ১০ বছর আগে ভাল ছিল। আমি তখন অন্যের বাড়িতে কাজ কর্ম করে সুন্দর ভাবে সংসার চালাতাম। কিন্তু বর্তমান চোখ ২টি নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর অনেক কষ্ট করে কোন বেলা খেয়ে আবার কোন বেলা না খেয়ে দিনাতি পাত করছি। দোকানে বেচা বিক্রি না হলে সে দিন আর পরিবারের সদস্যদের পেট পুরে খাবার জোটেনা। দৃষ্টি প্রতিবন্ধি আইয়ুব হোসেন আশ্রুসজল চোখে বললেন আমি খাস জায়গায় কোন রকম বেড়ার বাড়ি করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মাথা গুজে রয়েছি। সমাজে অনেক অর্থশালী ব্যক্তি রয়েছেন তাদের মধ্যে কেউ যদি আমাকে সামান্য পরিমান সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন তা হলে আমি দোকানে মালা মালের সংখ্যা একটু বাড়িয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হয়ত বা মোটা চালের ভাত খেয়ে মোটা কাপড়  পড়ে কোন রকম  বাঁচতাম।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button