রংপুর বিভাগসারাদেশ

নীলফামারীতে নি¤œ আয়ের মানুষের ত্রাহি অবস্থা

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: নীলফামারীতে চাল ডাল তেল পেঁয়াজ সবজি বাজারে স্বস্তি নেই। নিত্যপণ্যের চড়া মূল্যে দিশেহারা সবাই। নি¤œ আয়ের মানুষের ত্রাহি অবস্থা। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নেই কোন রুটিন অভিযান। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, বাজারের নিয়ন্ত্রণ আসলে কারা করবে? সরকার প্রতি কেজি আটাশ চালের দাম নির্ধারণ করেছে ৪৬ টাকা। তবে সটি বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৫ টাকায়। আর সবচেয়ে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়। যদিও তার নির্ধারিত মূল্য ৩৭ টাকা। আলুর নির্ধারিত দাম ৩৫ টাকা হলেও বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে লিটারে ৫-১০ টাকা। ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০-১৫ টাকা। আর পর্যাপ্ত পরিমানে সরবারহ থাকা সত্বেও শীতকালীন সবজির বাজার লাগামহীন। এছাড়া বাজারভেদে দামের পার্থক্যও লক্ষ্য করা গেছে।
সরে জমিনে নীলফামারী সদর, সৈয়দপুর, কিশোরগঞ্জ, জলঢাকা, ডোমার ও ডিমলার সবজি বাজারগুরোতে গিয়ে দেখা যায়, একেক বাজারে এসব ভোগ্যপণ্য একেক দামে বিক্রি হচ্ছে। সৈয়দপুরে রেলওয়ে কারখানা গেট বাজারের খুচরা দোকানে দেশি পেঁয়াজ ৮৫ টাকা, আমদানি করা ছোট পেঁয়াজ ৭০ টাকা, আমদানি করা বড় পেঁয়াজ ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে নীলফামারী পৌর সবজি বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও আমদানি করা পেঁয়াজ জাত ও মানভেদে ৫০-৭০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। সৈয়দপুর রেলওয়ে গেট বাজারে দামের বিষয়ে জানতে চাইলে খুচরা ব্যাবসায়ী আইনুল ইসলাম বলেন, আমাদের কেনা বেশি পড়েছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। সরকার প্রতি কেজি আলুর সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৩৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও তা ওই বাজারগুলোতে ৪৫ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারে সবকিছুই যখন ঊর্ধ্বমুখী, তখন এ তালিকায় যোগ দিয়েছে তেল এবং ডালও। চিকন মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০ টাকা কেজি, মোটা মসুর ডাল ৮০-৯০ টাকা কেজি।
প্রতিবছর সাধারণত বর্ষা ও বন্যার মৌসুমে সবজির দাম বাড়লেও শীত আসতেই সব ধরনের সবজির দাম কমতে থাকে। কিন্তু এবার নভেম্বরের দুই সপ্তাহ চলে গেলেও সে চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। বেগুন, করলা, চিচিঙ্গা, পটোল, ঢেঁড়স, বাঁধাকপি, ফুলকপি, গাজর, শসাসহ প্রায় সব সবজিই বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা কেজিতে। তবে শিম এবং টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়।
নীলফামারীরতে একটি অফিসে পিয়নের চাকরি করেন পঞ্চাষোর্ধ্ব আব্দুস সবুর। তিনি বলছিলেন, মাসে ১০ হাজার টাকা বেতন পাই। সে হিসাবে প্রতিদিন বেতন ৩৩৩ টাকা। ছয়জনের সংসারে প্রতিদিন চাল লাগে ৩ কেজির বেশি। শুধু চাল কিনতেই যদি ২০০ টাকা চলে যায়, তাহলে তরকারি কিনব কী দিয়ে আর সংসারের অন্যান্য খরচ চলবে কীভাবে? টিসিবির ট্রাকে কিছুটা কম দামে চাল, ডাল পাওয়া যায়। কিন্তু সবাই তো আর লাইনে দাঁড়াতে পারে না। তা ছাড়া যারা সারা দিন অফিস থাকে, সন্ধ্যার পরে গিয়ে টিসিবির পণ্যও পাওয়া যায় না।
দিনাজপুুর অঞ্চলের দায়িত্ব প্রাপ্ত জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মমতাজ বেগম মুঠোফোনে বলেন, বাজার পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যারা অতিরিক্ত দাম নিচ্ছেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button