রংপুর বিভাগসারাদেশ

নীলফামারীতে শ্বশুর পরিবারের নির্যাতনে বাড়ি ছাড়া এক অসহায় স্বামী

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: শ্বশুর পরিবারের নির্যাতন, বাড়ি লুটপাট, মিথ্যা যৌতুক মামলায় ঘরছাড়া হয়েছে রফিকুল ইসলাম নামের এক অসহায় স্বামী। ঘটনাটি নীলফামারীর সৈয়দপুরের বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের বাড়াইশাল পাড়ার।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ঢাকায় এক গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে চাকুরী করতে গিয়ে পিতা-মাতাহীন এতিম রফিকুল ইসলামের সহকর্মী মুক্তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর তারা দুজনে ২০০৭ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। যেহেতু এইকুলে তার কেউ নেই তাই রফিকুল তার জমানো টাকায় শ্বশুরবাড়ি এলাকায় জমি কিনে টিনসেড পাকা বাড়ি নির্মান করে দুই সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করে আসছে। ফসলী জমি কেনার জন্য তিনি তার শ্বশুরকে টাকা দেয়। কিন্তু জমি কিনে না দিয়ে তার পাঠানো টাকার একটি বড় অংশ আত্মসাত করে। আর সেই টাকা ফেরত চাওয়াতে তাকে স্ত্রী-সন্তান ও ভিটে ছাড়া হতে হয়েছে। স্ত্রী মুক্তা বেগমকে দিয়েই স্বামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে শ্বশুর পরিবার। এর আগে তাদের হাতে শারিরীক নির্যাতনের শিকার হয়ে তিনি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দেয়। কিন্তু মুক্তা বেগম ও তার পরিবার গ্রাম আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আদালতে মিথ্যা মামলার আশ্রয় নেয়। ২০০৭ সালে বিয়ে হলেও মামলায় কল্পিত ২০০৩ সালে বিয়ের কাবিননামা এবং ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকার দেনমোহর উল্লেখ করা হয়। গ্রামবাসীদের সহায়তায় ফিরে পাওয়া বাড়িতে বসে সাংবাদিকদের কাছে এমন তথ্য তুলে ধরে নির্যাতনের শিকার রফিকুল ইসলাম। এ সময় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম, আ’লীগ নেতা জয়নাল আবেদীন খান, উজ্জ্বল হোসেন, আব্দুস সালাম, আজিজুল হক, শেখ কবির হোসেন, শাহিনুর ইসলাম, শিবু সরকার সহ শতাধিক গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে না এসে একতরফা ভাবে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন। এ ছাড়াও বিবাদীকে কৌশলে অফিসে ডেকে নিয়ে বাদীর লোকজনের দ্বারা জোর পূর্বক কিছু কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছেন।

ইউপি চেয়ারম্যান প্রনোবেশ চন্দ্র বাগচী এ প্রসঙ্গে বলেন, নির্যাতনের শিকার রফিকুল ইসলাম ইউনিয়ন পরিষদে দেয়া অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিবাদী মুক্তা বেগম সহ তার পরিবারের লোকজনদের গ্রাম আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য তিন দফায় নোটিশ করা হয়। কিন্তু তারা হাজির না হওয়ায় বাদীকে উচ্চ আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। পরবর্তীতে গত ৩১ অক্টোবর গ্রাম্য শালিসে উভয় পরিবারের উপস্থিতিতে বিষয়টি শর্ত সাপেক্ষে নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নুরুন্নাহার শাহজাদী জানান, ঘটনাস্থলে তদন্তের জন্য তার প্রতিনিধি পাঠানো হয়েছিল। এছাড়া আমার অফিসে ডেকে নিয়ে এসে উভয়পক্ষকে বক্তব্য নেয়া হয়েছে। তদন্তে যা পাওয়া গিয়েছে তার প্রতিবেদন প্রেরন করা হয়।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button