খুলনা বিভাগসারাদেশ

বেহাল অবস্থায় চলছে কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা কার্যক্রম

রাজবাড়ী প্রতিনিধি:দেশের প্রান্তিক মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকার সারা দেশে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করে। রাজবাড়ীর পাংশাতেও বর্তমানে ৩০টির মতো কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। প্রতিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ছয় হাজার মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার কথা। এসব ক্লিনিকের মাধ্যমে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, টিকাদান কর্মসূচি, পুষ্টি, স্বাস্থ্যশিক্ষা, পরামর্শসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করার কথা রয়েছে। অথচ এসব ক্লিনিকের কার্যক্রম যেভাবে চলছে, তা সত্যিই হতাশাজনক।
দেখা গেছে, অযত্ন, অবহেলা এবং কিছু মানুষের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে এর যে মূল উদ্দেশ্য, তা ব্যহত হচ্ছে। ফলে মুখ থুবড়ে পড়েছে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম। এ উপজেলার অনেক ক্লিনিকে সিএইচসিপি থাকলেও তারা ঠিক সময়ে আসেন না, এলেও ১২টার দিকে চলে যান। এই রকম অবস্থা সরিষা , কলিমহর, মাছপাড়া সহ বেশ কিছু কমিউনিটি ক্লিনিকে। ফলে এলাকার বাসিন্দারা ঠিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না।  মাছপাড়ার ২টি (বরুলিয়া ও মেঘনা) সরিষার ১ টি (বিলপদিনদিয়া) কমিউনিটি ক্লিনিকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে গিয়ে সেখানকার সিএইচসিপিদের পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে মাছপাড়ার বরুলিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মকর্তা সজল জানান, প্রায় দিন তিনি ক্লিনিকে থাকেননা। বিশেষ কোনো কাজে বাইরে গেলে ক্লিনিক বন্ধ থাকে। শুধু এসব ক্লিনিকই নয়, উপজেলার আরও অনেক স্থানে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে একই ধরনের নাজুক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সংস্কারের অভাবে ক্লিনিকের ভবনগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এসব ক্লিনিকে ঝুঁকি নিয়ে চলছে চিকিৎসা। বহু ক্লিনিকে নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও লোকবল। এছাড়া বেশিরভাগ ক্লিনিকে ওষুধের সংকট লেগেই থাকে। কোথাও কোথাও দেখা গেছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই। নিয়মিত পানির সরবরাহ নেই। কোথাও আবার শৌচাগার নষ্ট।
অনেক ক্লিনিকে রয়েছে দালালচক্রের দৌরাত্ম্য। অবকাঠামোগত সমস্যার পাশাপাশি দুর্নীতি, অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার কারণে এসব ক্লিনিকের সেবা কার্যক্রম বলতে আর কিছু নেই। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. আনজুয়ারা খাতুন বলেছেন, শুরুর দিকে ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসাসেবার মান ভালো ছিল। বর্তমানে সিএইচসিপিদের অনীহা আর অবহেলা ও নানা ধরনের সংকটে ক্লিনিকগুলোতে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। তবে, এমন পরিস্থিতিতে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে সেবার মান ও সুবিধা-অসুবিধা মনিটরিংয়ের জন্য ইতিমধ্যে একজন পরিসংখ্যান সহকারীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। রির্পোট পেলে সিএইচসিপিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button