রংপুর বিভাগসারাদেশ

মামলা জটিলতা কাটিয়ে আবারো চালু হলো বুড়ি তিস্তা সেচ প্রকল্প

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি : দীর্ঘ দশ বছরের মামলা জটিলতা কাটিয়ে নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকার বুড়ি তিস্তা সেচ প্রকল্পের কাজ আবার চালু হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে ব্যারেজের সব কয়টি গেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে উজানের পানি বাড়ায় এ অঞ্চলের প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে গিয়ে ফসরে ক্ষতি হয়েছে। তবে অধিগ্রহনকৃত জমি ছাড়া অন্যদের তেমন কোন ক্ষতি হবেনা বলে দাবী পাউবো’র। কর্তৃপক্ষ বলছে আগামী ইরি-বোরোর মৌসুমেই সুবিধাভোগ করতে পারবে এ অঞ্চলের কৃষকরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, নীলফামারীতে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে সেচের সুবিধার্থে ১৯৬৭ সালে কালিগঞ্জে এ প্রকল্পটি চালু করা হয়। এর জন্য ১ হাজার ২১৭ একর জমি অধিগ্রহন করা হয়। কিন্তু এর জলাধার ইজারা দেয়া হলে দুলাল নামের এক মৎসজীবী ক্ষুব্ধ হয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে ২০১৮ সালে রিটটি খারিজ হয়। আইনি লড়াই চলাকালিন সময় ক্ষতিগ্রস্থ সেচ প্রকল্পটি সংস্কার করতে লেগে যায় দুই বছর। এরই মধ্যে জলাধরের সব গেট লাগিয়ে সেচ দেয়ার উপযুক্ত করা হয়েছে। তবে এতে উজানের পানি জমে ফসলের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।

আবার সেচ প্রকল্প চালু হচ্ছে জেনে প্রকল্প এলাকার সুবিধাভোগী কৃষকরা বেজায় খুশি। তাদের মাঝে যেন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। তবে ফসল জমির ক্ষতি হওয়ায় কৃষকরা ক্ষুব্ধ। কমলা প্রসাদ নামে একজন কুষক বলেন, ‘অনেক দিন ধরে জলাধরগুলো বন্ধ ছিল। যদি পানি দেয় তাহলে হামরা জমি চাষ কইরা উপকার পামো। জলদি জলাধার ও ক্যানেল খুঁড়ির নাগিবে। তা নাহইলে ঠিকমতো জমিতে পানি দিবার পাইমনা।’
একই উপজেলারর আরেক এক কৃষক জাহাঙ্গির আলম বলেন, দুই বিঘা জমিতে বাদম এবং আর এক বিঘা জমিতে পিঁয়াজ আবাদ করেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে ব্যারেজের গেট বন্ধ করে দেয়ায় আমার জমির সব ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রকল্পটি চালু রাখতে আর কোনো সমস্যা নেই। এ অঞ্চলের কৃষক যাতে সহজে পানি পায় সে জন্য বুড়ি তিস্তা সেচ প্রকল্পের সেচ নেটওয়ার্ক তৈরি, রিজার্ভার তৈরি, খাল খনন ও ব্যারেজ সংস্কারের জন্য আমরা ১২০ কোটি ৭০ লাখ টাকার একটি ডিপিপি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। রিট খারিজের পর প্রকল্প সংসার কাজে ব্যারেজের গেট বন্ধ করা হয়েছে। এতে অধিগ্রহণকৃত জমিতেই শুধু উজানের পানি জমেছে। এতে কৃষকের ক্ষতির কোন সম্ভাবনা নেই। তিনি আরও জানান, এবার ৬০৬ একর জমিতে সেচ দেয়া যাবে। আগামী বছর তা বেড়ে দাঁড়াবে ২ হাজার ২৩২ হেক্টর।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button