সারাদেশ

যশোর চৌগাছায় গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

যশোর ভ্রম্যমান প্রতিনিধি: যশোরের চৌগাছার তিলকপুর গ্রামের গৃহবধূ লায়লাতুন জান্নাতকে হত্যার অভিযোগে স্বামীসহ ৮ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা হয়েছে।

শুক্রবার নিহত লায়লার পিতা নড়াইল শহরের মহিষখোলা এলাকার অ্যাডভোকেট শেখ তায়ব আলী বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন।

আসামিরা হলো, চৌগাচার তিলকপুর গ্রামের নিহত লায়লার স্বামী এনামুল কবীর ইসমাইল, দেবর হাসান মন্ডল, বকুল মন্ডল, ননদ তারা বেগম, শশুর এক্সের আলী মন্ডল, শাশুড়ি জুলেখা বেগম ও বকুল মন্ডলের স্ত্রী মণি বেগম।

মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০০৫ সালে পারিবারিকভাবে চৌগাছার তিলকপুর গ্রামের এক্সের আলী মন্ডলের ছেলে এনামুল কবীর ইসমাইলের সাথে লায়তুন জান্নাতের বিয়ে হয়।

দাম্পত্য জীবনে লায়লাতুন দুই সন্তানের জননী। ২০১২ সালে লায়লাতুনের স্বামী ইসমাইল ঢাকায় জমি ক্রয় করতে স্ত্রী কাছে যৌতুক দাবি করে আসছিল। যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় লায়লাতুনের উপর শারীরিক ও মানষিক স্বামীসহ বাড়ির লোকজন নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে লায়লতুনকে পিতার বাড়ি নড়াইলে তাড়িয়ে দেয় স্বামী ইসমাইল। এ ঘটনায় লায়লার পিতা বাদী হয়ে নড়াইল সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে জামাই ইসমাইলের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

পরে মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার পিতা মামলা প্রত্যাহার করে নেন। জামাইকে দেন যৌতুকের ২ লাখ টাকা ও আসবাপত্র এবং স্বর্ণালংকার। কিছুদিন পর আবারও ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে স্ত্রী লায়লাতুনের উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় ইসমাইল ও তার পরিবারের লোকজন।

লায়লাতুনের পিতার চিকিৎসার জন্য টাকা ব্যয় হওয়ায় আরও যৌতুকের টাকা এনে দিতে পারেনি। ২৩ এপ্রিল সকালে লায়লাতুনকে যৌতুকের টাকা এনে দিতে বললে অস্বীকার করায় তাকে মারপিট করা হয়। বিষয়টি মোবাইল ফোনে লায়লা তার পিতাকে জানান।

৩০ এপ্রিল সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে তার স্বামী, শশুর, শাশুড়িসহ সকলে লায়লাতুনকে মারপিট করে। গুরুতর আহত লায়লাতুনের অবস্থার অবনিত হলে তার মুখে কীটনাশক ঢেলে দিয়ে শ্বশুর বাড়ির লোকজন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে প্রচার করে।

লায়লাতুনকে প্রথমে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এরপর যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। লায়লাতুনের অবস্থার অবনতি হলে ১ মে সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যায়।

বিষয়টি লায়লাতুনের পিতার বাড়িতে জানানো হয়নি। ১ মে দুপুরে লোক মারফত জানতে পেরে লায়লাতুনের পিতা চৌগাছা থানায় এ এজাহার করেন। সন্ধ্যার পর থানার এসআই গিয়াস উদ্দিন তিলকপুর স্বামীর বাড়ি থেকে লায়লাতুনের লাশ উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। ২ মে ময়না তদন্ত শেষে নড়াইলে পিতার বাড়িতে লায়লাতুনের দাফন করা হয়েছে বলে জানা গেছে

Attachments area

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button