রংপুর বিভাগসারাদেশ

লোকসানের শঙ্কায় সৈয়দপুরের খামারিরা

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: কোরবানির জন্য লালান-পালন করা গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে সৈয়দপুরের খামারিদের। ঈদুল আযহা যত ঘনিয়ে আসছে খামারীদের দুশ্চিন্তা ততই বেড়ে চলেছে।
উপজেলা থেকে স্থানীয় চাহিদার পাশাপাশি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসায়ীরা গরু ক্রয় করে নিয়ে যান। কিন্তু এবার চিত্রটা সম্পূর্ন উল্টো। কোরবানীর ঈদ এগিয়ে এলেও এখন পর্যন্ত কেউ যোগাযোগ করেনি ওই খামারীদের সাথে। ফলে কাঙ্খিত দাম পাওয়ার আশা তো দুরের কথা বরং লোকসানের শংকায় রয়েছেন তারা।
সৈয়দপুরের বেশ কয়েকটি খামার মালিকের সাথে কথা বলে জানা গেছে মূলত কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে তারা সারা বছর গরু-ছাগল লালন পালনে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে থাকেন। কিন্তু করোনার কারনে এবারে সঠিক মূল্যে পশুগুলো বিক্রি করতে না পারলে তারা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বেন। দিন দিন যেভাবে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হচ্ছে কিছুতেই যেন তারা দুশ্চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না।
উপজেলা প্রানীসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, মোটা তাজা করণ ৭৬ টি খামারে এবারে ৯ হাজার ১৯০ টি গবাদিপশু কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬ হাজার ৫৯৬ টি গরু এবং ২ হাজার ৫৯৪টি ভেড়া ও ছাগল। এছাড়া পারিবারিকভাবে কয়েক হাজার গরু- ছাগল প্রস্তুত করা হয়েছে। কোরবানি উপলক্ষে প্রতিবছর স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা,চট্টগ্রাম,ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি করার উদ্দেশেই গবাদিপশুগুলো প্রস্তুত করা হয়। তবে এবারো তার ব্যাতিক্রম হবে না বলে আশাবাদী প্রানীসম্পদ বিভাগ।
সৈয়দপুর শহরের বাশবাড়ি এলাকার মিন্টু ১৩০ টি ষাঁড় প্রস্তুত করেছেন এবারের কোরবানীর জন্য। যার বাজারমূল্য ধারা হয়েছে প্রতিটি ৮০ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তিনি দীর্ঘ প্রায় এক যুগ ধরে গরু মোটা তাজা করনের খামার করছেন। রোজার ঈদের পরই বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা তার খামার থেকে গরু নিয়ে যান। কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত তার সাথে যোগাযোগ করেনি কেউ। ফলে কিছুটা শঙ্কাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের আদানি মোড়ের রাদিয়া ট্রেডার্সের আফসানা নামের আরেক খামারী বলেন,করোনার কারনে মানুষ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজারে ক্রেতা মিলবে কিনা, সঠিক দাম পাবে কিনা তা নিয়ে চিন্তিত তিনি। একই এলাকার সবুজ বাংলা খামারের আরজিনা জানান কোরবানীর জন্য লালন পালন করা ১৪ টি গরু নিয়ে হতাশায় ভুগছেন। এমনিতেই করোনার ভয় তারপর এবার আবার গবাদিপশুর ভাইরাস সংক্রমন বৃদ্ধি পেয়েছে। হাটে গরুগুলো ঠিকমত নিতে পারবে কিনা? সঠিক দাম পাবে কিনা এসব নিয়ে চিন্তিত তিনি। তিনি আরও জানান, ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে সারা বছর গরুগুলো লালন পালনে যে পরিমান ব্যয় করেছেন সে খরচটুকু পাবেন কিনা তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো. রাশেদুল হক বলেন,করোনা পরিস্থিতিতে খামারিদের মধ্যে কিছুটা হলেও ভীতি সঞ্চার হয়েছে। তবে খামারিরা যাতে পশু বিক্রয়ের জন্য সঠিকভাবে পরিবহন করতে পারে,যাতে কেউ হয়রানীর শিকার না হয় সেজন্য আমরা প্রশাসনের সাথে সম্মিলিতভাবে প্রচেস্টা চালিয়ে যাচ্ছি। করোনার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করব। পশুর হাটে এবার সামাজিক দুরুত্ব বজায় রেখে গরু-ছাগল ক্রয় বিক্রয়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। তিনি আরও জানান ইতোমধ্যে অনেক খামারি অনলাইনের মাধ্যমে গরু বিক্রি শুরু করেছেন। এ ক্ষেত্রে তিনি ক্রেতা- বিক্রেতা উভয়কেই অনলাইন মাধ্যমে ব্যবহারের আহবান জানান।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button