রাজশাহী বিভাগসারাদেশ

শেরপুরে উৎসবমুখর পরিবেশে পৌর নির্বাচনের ভোটগ্রহণ

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুর পৌরসভা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৬জানুয়ারি) সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ১১টি কেন্দ্রে মোট ৮২টি কক্ষে একযোগে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোটারদের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থাকলেও দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া তেমন কোন অঘটন ঘটেনি। তবে কিছু জাল ভোটের প্রমাণ মিলেছে। সুজিত দাস নামের এক ব্যক্তি নিজেরে ভোট দিতে পারেননি। শহরের স্যানালপাড়ার বাসিন্দা এই ব্যক্তি বেলা তিনটায় বগুড়ার শেরপুর পৌরসভা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে যান। সঙ্গে আইডি কার্ডও আনেন। কিন্তু ভোটকক্ষে ঢুকে জানতে পারেন তাঁর ভোট হয়ে গেছে। প্রায় দুই ঘন্টা আগেই অন্য কেউ এসে তাঁর ভোট দিয়ে গেছেন। এমন কথা শোনার পর হতবাক বনে যান সুজিত দাস। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তার দ্বারস্থ হলেও কোনো প্রতিকার পাননি। শেষমেষ ভোট না দিয়েই হতাশা ও ক্ষোভ নিয়েই বাড়ি ফিরে যান। এরআগে বেলা সোয়া দশটার দিকে শেরপুর ডিজে হাইস্কুল কেন্দ্রে ভুয়া ভোটার সেজে জাল ভোট দিতে যান আবু সাঈদ নামের এক যুবক। অবশ্য তিনি হাতেনাতে ধরা পড়েন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাতদিনের বিনাশ্রম কারাদ- দেওয়া হয় তাকে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন আক্তার এই সাজা দেন।
এই নির্বাচনে মেয়র পদে ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন- আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনিত প্রার্থী আব্দুস সাত্তার প্রতীক (নৌকা), বিএনপির দলীয় মনোনিত প্রার্থী স্বাধীন কুমার কু-ু প্রতীক (ধানের শীষ), বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী জানে আলম খোকা প্রতীক (জগ) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দলীয় মনোনিত প্রার্থী ইমরান কামাল প্রতীক (হাতপাখা)। এছাড়া ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে মোট ৩৬জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পৌরশহরের টাউন কলোনি এজে উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সকালের দিকে ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীত থাকায় ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা সাড়ে ৯টার পর ভোটার উপস্থিতি বাড়তে শুরু করেছে। তাই কেন্দ্রের মধ্যে ভোটগ্রহণের কক্ষের বাইরে নারী-পুরুষ ভোটারদের দীর্ঘ লাইন চোখে পড়ে। তাঁরা একজনের পর আরেকজন কক্ষে ঢুকে নিজের পছন্দের প্রার্থীর প্রতীকে নির্বিঘেœ ভোট দিচ্ছেন। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা কেএম ওবায়দুর রহমান বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে। এখন পর্যন্ত তার কেন্দ্রে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া সব প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর এজেন্টই বুথে আছেন। তাদের নিকট থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
সহকারি রিটানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোছা. আছিয়া খাতুন জানান, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ন পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় ২প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাবের ২টি টিমসহ পুলিশ ও আনসারের একাধিক টিম কাজ করেন। এছাড়া অতি গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ৯জন ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক উপস্থিত থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রায় দেড়শ’ বছরের প্রাচীণ এই শেরপুর পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ২৩হাজার ৭৫৪জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১১হাজার ৪১৫জন এবং ১২হাজার ৩৩৯জন নারী ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button