আন্তর্জাতিক

হাফিজ সইদকে টাকা তোলার অনুমতি দিতে আবেদন পাকিস্তানের।

মুম্বই হামলার মূলচক্রী হাফিজ সইদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বার বার পাকিস্তানকে বলেছে ভারত। ইসলামাবাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বহু তথ্যপ্রমাণ (ডসিয়ের)। কিন্তু, তা নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া দূর তো অস্ত, এ বার রাষ্ট্রপুঞ্জেও লস্কর ই তৈবার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতার হয়ে ব্যাট ধরল ইমরান খানের সরকার। ‘পরিবারের খরচ’ চালানোর জন্য তাকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে দিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে আবেদন জানিয়েছিল ইসলামাবাদ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে গত ১৫ অগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের দিনেই তাতে সায় দিয়েছে আন্তর্জাতিক ওই মঞ্চ।

সূত্রের খবর, হাফিজকে পাকিস্তানি মুদ্রায় দেড় লক্ষ টাকা (ভারতীয় মুদ্রায় ৬৮ হাজার ২০৭ টাকা) তুলতে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে আবেদন করে পাকিস্তান। নিরাপত্তা পরিষদের যে কমিটি সন্ত্রাসবাদীদের উপর নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত বিষয়টি নজর রাখে তাদের ইসলামাবাদ চিঠি দিয়ে জানায়, ‘হাফিজ সইদের উপর তার পরিবারের চার সদস্য নির্ভরশীল। পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের খাদ্য, পানীয় ও বস্ত্র জোগাড়ের দায়িত্ব হাফিজ সইদের উপরেই।’ ওই চিঠিতে হাফিজ সইদের স্বপক্ষে আরও কারণও তুলে ধরেছে পাকিস্তান। চিঠিতে লেখা, হাফিজ সইদ ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত লাহৌরের ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। ২৫ বছর চাকরি করার জন্য তিনি পেনশন পাওয়ার যোগ্য এবং তিনি পাকিস্তানি মুদ্রায় ৪৫ হাজার সাতশো টাকা (ভারতীয় মুদ্রায় ২০ হাজার ৭০০ টাকা) পেনশনও পান।’

রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ওই কমিটির তরফে জানা হয়েছে, ‘১৫ অগস্ট পর্যন্ত সময়সীমা থাকা সত্ত্বেও ওই খসড়া চিঠি নিয়ে কোনও সদস্য আপত্তি করেননি। ফলত, এই আবেদনে অনুমতি দিয়ে তা নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সচিবালয়কে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।’

মুম্বই হামলা, পুলওয়ামা হামলা-সহ ভারতের বুকে একাধিক নাশকতামূলক ঘটনায় বার বারই মূলচক্রী হিসাবে উঠে এসেছে হাফিজ সইদের নাম। তার হাত ধরেই তৈরি হয়েছিল লস্কর ই তৈবার মতো জঙ্গি গোষ্ঠী। ২০০৮ সালে মুম্বই হামলার পর হাফিজ সইদকে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দফতর তার মাথার দাম ১ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৭০ কোটি টাকার বেশি) ঘোষণা করে। এমনকি তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও ব্লক করা হয়েছিল।

হাফিজ সইদকে নিয়ে ইসলামাবাদের কোর্টে বার বার অভিযোগের পাহাড় জমা করেছে নয়াদিল্লি। পাল্টা কৌশল হিসাবে, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পাক সরকার যে কতটা ‘কড়া পদক্ষেপ’ নিচ্ছে তা আন্তর্জাতিক মহলের সামনে তুলে ধরতে ব্যগ্র ছিল পাকিস্তান। কিন্তু, হাফিজকে নিয়ে ইসলামাবাদের এই পদক্ষেপ তাদের সেই ভাবমূর্তিতে ফের ধাক্কা দিল।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button