জাতীয়

বেনাপোলে সীমান্তে অবৈধ্য অনুপ্রবেশ বৃদ্ধি, সীমান্তজুড়ে করোনা আক্রান্তের আশংষ্কা

সারা বিশ্ব এই মুহুর্তে করোনা ভাইরাস জ্বরে দিশাহারা। গত দু’মাসে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে প্রায় ১৪ হাজার, আক্রান্ত হয়েছে প্রায় তিন লাখের অধিক মানুষ। প্রতিদিনই এ জীবন নাশকারী ভাইরাসে নতুন নতুন এলাকায় নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে এবং নিহতের সংখা বৃদ্ধি হচ্ছে।

যে ভাইরাস নিয়ে এই মুহুর্তে উন্নত বিশ্বগুলোর মাথা ব্যাথার অন্যতম কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।অনেক দেশই ইতোমধ্যে লকডাউন ঘোষণা দিয়েছে। সীমান্তগুলোও করে দিয়েছে সীলগালা। আর ঠিক সেই মুহুর্তো বাংলাদেশের বেনাপোল সীমান্তগুলোর পেক্ষপট ভিন্ন।

বেনাপোল পুটখালী,সাদিপুর,গোগা,কায়বাসহ অধিকাংশ সীমান্তের চোরাই ঘাটগুলো দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে অগণিত মানুষ। যার ফলে বেনাপোলসহ দেশে করনোভাইরাস ছড়ানোও আক্রানের সংখ্যা বৃদ্দি পাচ্ছে।এক শ্রেণির অসাধু আদম ব্যবসায়ী সীমান্ত প্রহারীদেরকে বিশেষভাবে ম্যানেজ করে এসব লোকজন ঢোকাচ্ছে দেশের ভিতরে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগও বিধি নিষেধ অম্লান করে সীমান্ত ঘাট দিয়ে চোরাই পথে  টাকার বিনিময়ে প্রতিনিয়ত দেশে প্রবেশ করানো হচ্ছে ভিনদেশীদের।

অর্থলোভী এসব মানবপাচারকারীরা অর্থের লোভে প্রানঘাতী ভাইরাস বহন করে আনছেন দেশের অভ্যান্তরে। যা তাদের পরিবার ও গ্রামের জন্য মরণ ব্যাধী। ভারত সীমান্ত পেরিয়ে এসব নারী পুরুষ মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকে বা অন্য কোন যানে চেপে বাস স্ট্যান্ড,রেলস্টেশনে অবাধে চলাচল করছে।এর ফলে বেনাপোল সীমান্ত জুড়ে বহুগুনে ঝুকি বাড়ছে করোনাভাইরাসের আক্রান্তের।

পুটখালী সীমান্তের চোরাঘাট দিয়ে আসা নড়াইল চাচুড়ী এলাকার জেসমিন জানান, তার বাবার নাম নুর মুহাম্মাদ।বেশ কয়েক বছর আগেই তার স্বামী মারা গেছেন। কয়েক বছর ধরে তিনি তার দু’সন্তান নিয়ে ভারতে থাকেন।তার এক সন্তানের ওখানে গিয়ে আরো একটি সন্তানও হয়েছে। সে দেশের সরকার কড়াকড়ি করাতে তারা ভারতে থাকতে পারছে না। তাই বেনাপোল পুটখালী সীমান্তের এক দালালকে ২০ হাজার টাকায় চুক্তি করি তিন জনকে দেশে আসার জন্য। সে আমাদের কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে সীমান্ত ঘাট পার করে দেয়। এর পর পুটখালী থেকে একটি ইজিবাইকে উঠিয়ে বলে এদের বেনাপোল রেলস্টেশনে নামিয়ে দিতে। বেনাপোল স্টেশন থেকে ট্রেনে করে নওয়াপাড়া রেলস্টেশনে নেমে সেখান থেকে নিজ বাড়িতে যাবে বলে তিনি জানান এ প্রতিবেদককে।

সীমান্তের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, সাম্প্রতি ভারত সরকার ভারতীয় ভিসা বন্ধ করে দেওয়ায় চোরাই পথে অবৈধ লোক পারাপার বেড়েই চলেছে। এমনকি অনেক বিদেশী নাগরিক ভারতীয় সীমান্ত ব্যবহার করে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী বিএসএফ বাংলাদেশে লোকজন প্রবেশ করতে সহযোগীতা করছে। তবে বাংলাদেশ কোন লোকজন ভারতে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।

খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মঞ্জুর-ই এলাহী জানান, সীমান্তে বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। আপনারা তথ্য দিয়ে সহোযোগীতা করুন প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা  নেওয়া হবে।

বেনাপোল পোর্টথান অফিসার ইনচাজ মামুন খান বলেন, মহামারি করোনা ভাইরাস বিস্তর প্রতিরোধে এ এলাকায় পুলিশ প্রশাসন কঠোর ভূমিকায় রয়েছে। চোরাই পথে ভারত হতে আগত ব্যক্তিদের বিষয়ে আমাদের তথ্য দিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া কোন বিদেশ ফেরত ব্যক্তি যদি দেশে এসে স্বাভাবিক ভাবে ঘোরা ফেরা করলে আমাদেরকে জানালে আমরা তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেব বলে তিনি জানান।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button