জাতীয়রাজনীতিলিড নিউজশিক্ষাঙ্গন

জাবি উপাচার্যের নিরাপত্তায় ১০০ পুলিশ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের নিরাপত্তায় ১০০ সদস্যের একটি পুলিশের টিম মোতায়েন করা হয়েছে।

চলমান উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে ও অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্যের বাস ভবনের ভেতরে অবস্থান নেয়া জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এছাড়াও চলমান আন্দোলনে ভিসির পক্ষ থেকে পরবর্তী পদক্ষেপ ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক চলছে বলে জানিয়েছে ভিসিপন্থী কয়েকজন শিক্ষক।

সূত্র জানিয়েছে, একটু পর পর ভিসি ফারজানা ইসলামের বাস ভবনের ভেতরে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যাচ্ছেন এবং ভিসিকে নিরাপত্তা নিয়ে আশ্বস্ত করছেন।

ভিসিপন্থী শিক্ষকরা জানিয়েছেন, পুলিশের এমন নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যে থেকেও ভিসি তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে ভিসি কার্যালয়ের দিকে আসছেন শুনে তিনি অনেকটাই আতঙ্কিত।

এ বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী ইকবাল এক গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসের পরও উদ্বিগ্ন হয়ে আছেন ভিসি ম্যাডাম। তিনি এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।

এদিকে বাসভবনের সামনে দায়িত্বরত ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাহমিদুল ইসলাম বলেন, যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। এখানে কেউ বিশৃংখলা করতে আসলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

এদিকে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, প্রীতিলতা হল, সুফিয়া কামাল হল, জাহানারা ইমাম হল ও ফয়জুন্নেছা হলের গেট ভেঙে ছাত্রীরা মিছিলে যোগ দেন।

আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হল বন্ধে প্রশাসনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও তা প্রত্যাখানে তারা হলের গেট ভেঙে আন্দোলনে শামিল হয়েছেন বলে জানিয়েছেন এসব ছাত্রীরা।

ছাত্রীরা জানান, শিক্ষার্থীদের ওপর হওয়া ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলার প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাই আমরা। একই সঙ্গে উপাচার্যের অপসারণ দাবি জানাই।

তারপর থেকে জাবি ক্যাম্পাস আরও বেশি উত্তাল হয়ে ওঠে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উপাচার্য ভবনের সামনে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

প্রসঙ্গত আজ নিয়ে (মঙ্গলবার) টানা ১১ দিন প্রশাসনিক ভবন অবরোধ এবং দশম দিনের মতো সর্বাত্মক ধর্মঘট পালন করেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ফলে কার্যালয়ে যেতে পারছিলেন না উপাচার্য।

এদিন দুপুর ১২টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলায় আটজন শিক্ষকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এসে আন্দোলনরতদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। হামলা চলাকালে উপাচার্যের বাসভবনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশকে নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। এছাড়া উপাচার্যপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ‘ধর ধর’, ‘জবাই কর’ স্লোগান দিয়ে হামলায় উসকানি দিতে দেখা গেছে।

পরে দুপুর ১টার দিকে পুলিশ, শাখা ছাত্রলীগ, প্রশাসনপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীদের কড়া পাহারায় নিজ গাড়িতে করে বাসভবন থেকে বের হন উপাচার্য। তাদের কড়া পাহারায় পুরাতন প্রশাসনিক ভবনে নিজ কার্যালয়ে ৭-৮ মিনিট অবস্থান করেন তিনি। পরে সেখান থেকে নতুন প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button