আইন-আদালতজাতীয়দুর্যোগলিড নিউজ

‘মিন্নির জবানবন্দি জজ মিয়া-জাহালমের আরেক সংস্করণ’

বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে আসামি করে চার্জশিট জমা দেয়া হয়েছে। এই চার্জশিটে মিন্নির দেয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিকে আলোকে তাকে আসামি করা হয়। এই জবানবন্দিকে জজ মিয়া ও জাহালমের আরেক সংস্করণ বলে মন্তব্য করেছেন তার আইনজীবী জেড আই খান পান্না।

রোববার সুপ্রিমকোর্ট বার ভবনে পান্নার চেম্বারে মিন্নি ও তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর সাক্ষাৎ করেন। এ সময় আইনজীবী পান্নার পা ছুঁয়ে মিন্নি সালাম করেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী পান্না বলেন, রিফাত হত্যায় মিন্নিকে জড়িয়ে যে চার্জশিট দেয়া হয়েছে সেটা আগাগোড়ায় একটা মনগড়া উপন্যাস।

মূলত মূল আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে এ ধরনের কাজ করা হয়েছে। নাথিং নিউ। তিনি বলেন, এই জবানবন্দি জজ মিয়া ও জাহালমের আরেকটা সংস্করণ। আদালতে মিন্নির দেয়া জবানবন্দির প্রকাশ সম্পর্কে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী পান্না বলেন, ‘দেখেছি।

আমি তো কোর্টে বসেই সেটি দেখেছি। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত যখন আমাদের দেখাতে বলেছিলেন তখন এক নজর দেখেছি। সেটা তো একটা উপন্যাস।’ ওই জবানবন্দি দেখে আদালতকে সুপ্রিমকোর্ট বারের সভাপতি বলেছেন, ‘এত সুন্দর করে লেখা- যা চিন্তার বাইরে।

সুস্থ মাথায় কেউ এত সুন্দরভাবে লিখতে পারে না।’ জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জেড আই খান পান্না বলেন, আগেই করা হয়েছে। মিন্নি নিজে জেলখানা থেকে করেছেন। এই জবানবন্দি কারা তৈরি করেছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা তো পুলিশের কাছেই ছিল। পুলিশ ছাড়া তো আর এটা আসতে পারে না। এর আগে এটা গণমাধ্যমে এসেছে তা তো আমরা দেখেছি।

আদালতে যাওয়ার আগেই এটা প্রকাশিত হয়েছে। এটা কি ঠিক হয়েছে?-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঠিক হয়নি। এটা আদালত অবমাননা।

উল্লেখ্য, ২৬ জুন প্রকাশ্যে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডে স্ত্রী মিন্নির সামনে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে জখম করা হয়। পরে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড ২ জুলাই ভোরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়। এর মধ্যে মামলার অন্য আসামিদেরও গ্রেফতার করা হয়।

১৬ জুলাই সকালে বরগুনার মাইঠা এলাকায় বাবার বাসা থেকে মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনার পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রিফাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় ওই দিন রাত ৯টার দিকে মিন্নিকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। বিচারিক আদালতে জামিন নামঞ্জুর হলে হাইকোর্টে আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন।

জামিনের শর্ত হিসেবে বলা হয়েছে, মিন্নি তার বাবার জিম্মায় থাকবেন এবং গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর ২ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার আদালত ‘নো অর্ডার’ দেন। পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর কারাগার থেকে ছাড়া পান মিন্নি।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button