বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ ভূমি রাখাইনে ফেরত নিতে মিয়ানমার কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করে তাদের ওপর চাপ প্রয়োগে জার্মান সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন৷
স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বার্লিনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাসের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অভিযোগ করেন আবদুল মোমেন। জার্মান প্রতিপক্ষের সঙ্গে এটি আবদুল মোমেনের প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। ডয়েচে ভেলের প্রকাশিত সংবাদে এসব তথ্য জানা যায়।
ড. মোমেন জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবিত চারটি বিষয় উল্লেখ করেন এবং মিয়ানমার সরকার যাতে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে পারে সেজন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জার্মান সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। রোহিঙ্গাদের প্রতি সংঘটিত নৃশংসতার জন্য মিয়ানমারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে জার্মানির সমর্থনও চান।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার সরকার বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে রাজি হলেও তারা একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি।
এ জন্য জার্মান সরকারের কাছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে আহ্বান জানান।
বৈঠকে আবদুল মোমেন বলেন, ব্রেক্সিটের ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলো অনিশ্চয়তায় পড়ুক বাংলাদেশ এমনটা চায় না।
এছাড়া বাংলাদেশে জার্মানির বিনিয়োগ বাড়াতে আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। বৈঠকে জার্মানির সংস্থা ভেরিডোসের ই-পাসপোর্ট বাস্তবায়ন প্রকল্প এবং জ্বালানি খাতে জার্মান কোম্পানি সিমেন্স এজির কর্মকাণ্ড ও উন্নয়নের সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান শক্তিশালী বাণিজ্যিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করা হয় বৈঠকে।
পারস্পরিক স্বার্থের বিশ্বব্যাপী ইস্যু নিয়ে কথা বলার সময় ড. মোমেন জাতিসংঘে বাংলাদেশ কর্তৃক গৃহীত ও প্রচারিত ‘শান্তি সংস্কৃতির’ প্রস্তাব তুলে ধরেন। পরামর্শ দেন রাষ্ট্রগুলো যদি শান্তিপূর্ণ মনোভাব ও সহনশীলতার অনুশীলন করে, তাহলে বেশিরভাগ সংকট এড়ানো সম্ভব।
এ সময় বৈঠকে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস সিরিয়ায় সামরিক অভিযান বন্ধ করতে তুরস্কের প্রতি আহ্বান জানান।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানবিক অবস্থানের গভীর প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশের অর্জিত অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জার্মানি বাংলাদেশকে সমর্থন প্রদান করবে এ আশ্বাস দেন।