লকডাউন বা জরুরি অবস্থা কোনটাতেই বন্ধ করা যাচ্ছে না মানুষের চলাচল!
লকডাউন আর জরুরি অবস্থা কোনটাতেই বন্ধ করা যাচ্ছে না এক জেলা থেকে অন্য জেলায় মানুষের চলাচল। কাভার্ডভ্যানে কিংবা ট্রাকে করে নানা কৌশলে দলে দলে মানুষ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় স্থানান্তর হচ্ছেই। গত দুইদিনে যশোরে এরকম দুটি ঘটনা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার পর সবাই অবাক হয়ে যান।
শনিবার পর্যন্তও যশোর জেলায় কোন করোনা রোগী শনাক্ত ছিল না। কিন্তু ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ যেভাবে যশোরে ঢুকছে, তাতে কতদিন যশোর নিরাপদ থাকবে তা নিয়ে শঙ্কায় অনেকে। ইতিমধ্যে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার একজন ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে রবিবার নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনিই যশোরের প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী।
এদিকে রবিবার দুপুরের দিকে মণিরামপুর বাজারের গরুহাটা মোড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত দুটি ট্রাক আটক করেন। চালকের সাথে কথা বলার পর সন্দেহ হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাথে থাকা আনসার-ভিডিপির সদস্যরা ট্রাকের ত্রিপল উল্টে দেখেন সেখানে কোন পণ্য নেই, রয়েছে মানুষ। ৬ নারী ও তিন শিশুসহ এদের সংখ্যা ৬১ জন। তারা সবাই ইটভাটার শ্রমিক।
কয়েকমাস আগে কাজে গিয়ে কুমিল্লা ও মানিকগঞ্জে তারা আটকা পড়েন। রবিবার তারা ট্রাক দুটিতে করে সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও খুলনার পাইকগাছায় নিজ নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুফলচন্দ্র গোলদার বলেন, ট্রাকের সবার নাম-পরিচয় নিয়ে তাদের কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি এদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
এর আগে গত শনিবার আজমীর ট্রান্সপোর্টের একটি কার্গো ট্রাক যশোর শহরে ঢুকতে ব্যর্থ হয়ে চৌগাছা উপজেলার ভেতর দিয়ে যশোর অতিক্রম করার চেষ্টা করে। সকাল সাতটার দিকে ট্রাকটি চৌগাছা বাজার অতিক্রমের সময় কার্গোর ভেতরে মানুষের কণ্ঠ শুনে চৌগাছা বাজার সমিতির যুগ্ম সম্পাদক আজিজুর রহমানের সন্দেহ হয়। তিনি লোকজন নিয়ে কার্গোটি আটক করে দেখেন ভেতরে ৩৮ জন নারী পুরুষ ঠাসাঠাসি করে বসে আছে। এসময় স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে মারমুখী হয়ে ওঠে। পরে চৌগাছা পৌরসভার মেয়র নূর উদ্দিন আল মামুন হিমেল ও চৌগাছা থানার এসআই নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
এই কার্গোতে আসা সবাই ইটভাটার শ্রমিক। তারা ত্রিশালের বালিপাড়ায় একটি ইটের ভাটায় কাজ করতেন। সেখান থেকে তারা সাতক্ষীরার কাশিমাড়ি ইউনিয়নের নিজনিজ গ্রামে ফিরছিলেন। চৌগাছা পৌরসভার মেয়র ফোনে কাশিমাড়ি ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তাদের নিজ নিজ গ্রামে ফেরত যাওয়ার ব্যবস্থা করেন।