রংপুর বিভাগসারাদেশ

পানিতে সয়লাব সৈয়দপুরে ১ হাজার রেলওয়ে কর্মচারির কোয়ার্টার

,নীলিফামারী জেলা প্রতিনিধি: গত কয়েকদিনের টানা ভারি বর্ষনে পানিতে সয়লাব হয়ে পড়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেলওয়ে কোয়র্টারগুলো। এতে করে অসহায় ও মানবেতর জীবন-যাপন করছে ওইসব কোয়ার্টারে বসবাসকারী প্রায় এক হাজার রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারি ও তাদের পরিবার। সংস্কারের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা তসরুপ করা হলেও প্রতি বছর বর্ষায় একই অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। সমস্যা সমাধান না হওয়ায় বাধ্য হয়ে রেলওয়ে কোয়ার্টার ছেড়ে দিয়ে পাবলিক বাসায় ভাড়ায় থাকছেন অনেকেই। এতে করে রাজস্ব হারাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং ছেড়ে দেয়া কোয়ার্টারগুলো বেদখল হচ্ছে। তাই সমস্যা সমাধানে পুরাতন কোয়য়ার্টারগুলো ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণের অভিমত অধিকাংশের।
সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার মুন্সিপাড়া, সাহবেপাড়া, মি¯িত্রপাড়া,গোলাহাট, ইসলমাবাগম, রসুল পুর, আতিয়ার কোলনী, নিচু কোলনী, নতুন বাবু পাড়া সহ বিভিন্ন এলাকার রেল কোয়ার্টারগুলো বেহাল অবস্থা। ছাদ চুয়ে টপ টপ করে ঘরের ভিতরে পানি পড়ছে। বাড়ির আসবাব পত্র ভিজে একাকার। এমন কি ঘুমানোর মত জায়গা টুকুও নেই। জেগেই রাত কাটাচ্ছে ছেলে মেয়েসহ অনেকেই । রেলওয়ে ওয়াগন সপের কর্মচারী আতিকুল ইসলাম জানান, তিনি ইসলামাবাগ ৫৩৫/ এফ নং কোয়ার্টার বরাদ্দ নিয়ে প্রায় সাত বছর ধরে বসবাস করছেন। অথচ ওই ইউনিটে উঠার পর থেকে একবার ও সংস্কার করা হয়নি। পর পর দু’বার লিখিত ভাবে আবেদন করার পর ও সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। বাধ্য হয়ে নিজেই সিমেন্ট বালু কিনে সংস্কার করেছেন। দু’ বছর ভালই ছিল, কিন্তু চলতি বছর আবারও বৃষ্টির পানি চুয়ে পড়ছে । একই রকম অভিযোগ করে আতিয়ার কোলনীতে বসবাসকারী রেলওয়ে কর্মচারী আজমল হোসেন বলেন, বেতন থেকে যে পরিমান টাকা কেটে নেয়া হয় বাসা ভাড়াবাদ সেই টাকা দিয়ে এর চেয়ে অনেক ভাল পাবলিক বাসায় ভাড়া থাকা সম্ভব। তাই চিন্তা করেছি সামনে মাসে রেল কোয়ার্টার ছেড়ে দিয়ে পাবলিক বাসায়ই উঠবো।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, প্রায় একশত বছর পূর্বে সৈয়দপুরে রেলওয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য ২ হাজার ৬৭০ টি রেলওয় নির্মিত বসতবাড়ি সংস্কারের জন্য প্রতি বছর ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু ইতোমধ্যে ২০০ টি কোয়ার্টার বসবাস অনুপোযাগী ঘোষনা করা হয়েছে। অবশিষ্ট বসতবাড়িগুলোর মধ্যে প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তাদের জন্য নির্মিত ৩০ টি বাংলোর মধ্যে ১১ টিতে কর্মকর্তারা বসবাস করছেন। দি¦তীয় শ্রেণির কর্মকর্তারে জন্য নির্মতি ১শ’৪০টি বাংলোর মধ্যে ৬০ টিতে বসাবস করছেন। এ ছাড়া ডবল ৭০০ টি কোয়ার্টারের মধ্যে বরাদ্দ নিয়ে বর্তমানে ১০০ টি এবং ১ হাজার ৬০০ টি সিঙ্গেল কোয়ার্টারের মধ্যে ৮০০ কোয়ার্টারে বসবাস করছে রেলওয়ে কর্মচারী। বসবাসকারিদের মুল বেতন অনুযায়ী ভাড়া কর্তন করে রাজস্ব খাতে জমা করা হলেও পরিপূর্ণ সেবা পাচ্ছেন না তারা।
এব্যাপারে সৈয়দপুর রেলওয়ে সহকারি প্রকৈাশলি (পূর্ত) আহসান উদ্দিন জানান, নিয়মানুযায়ী বাসা বাড়ি প্রতি তিন বছর পর পর সংস্কার করতে হয়ে । কিন্তু সে অনুযায়ী বরাদ্দ দেয়া হয়ে না। এছাড়া তিনি আর ও জানান, কোয়ার্টারগুলো অবস্থা এতটাই খারাপ যে, সংস্কার করে ও কোন লাভ হয়না।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button