জাতীয়সারাদেশ

সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ত্রাণের জন্য হাহাকার

সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বন্যার পানিতে পুরোপুরি প্লাবিত হয়েছে নোয়াগাঁও, নলুয়ারপাড়, হরিনগর, জগন্নাথপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম।

বন্যার পানির তোড়ে অনেক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হওয়ার পাশাপাশি গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা। বেশিরভাগ মানুষের ঘরেই পানি ঢুকে পড়ায় খাটের ওপর চুলায় আগুন ধরাতে হচ্ছে। অনেকেই আবার দিন পার করছেন শুকনো খাবার খেয়ে।

গৌরারং ইউনিয়নের যুবলীগ সভাপতি রেজাউল করিম জানান, সেখানকার গ্রামগুলো এমনভাবে প্লাবিত হয়েছে যে নিরাপদ আশ্রয় নেয়ার জায়গাও নেই। বেশিরভাগ মানুষই খাবার সংকটে ভুগে ত্রাণের জন্য হাহাকার করছেন।

নোয়াগাঁও গ্রামের গৃহিনী পারুলা বেগম ও খাদিজা বেগম জানান, বন্যায় আবারও তাদের ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। চুলায় আগুন জ্বালানোর মতো জায়গা না থাকায় বেশিরভাগ সময়ই শুকনো খাবার খেয়ে থাকতে হচ্ছে।

একই গ্রামের সামছুল আলম নামে একজন কৃষক এবারের বন্যায় তার তার ঘর লন্ডভন্ড হয়ে গেছে উল্লেখ করে অন্য একজনের পতিত বাড়িতে তাবু টানিয়ে আশ্রয় নেয়ার কথা জানান।

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও সদর উপজেলার অন্তর্গত সদরপুর গ্রামে সুরমা নদীর পানি প্রবেশ করায় সেখানকার শতভাগ ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে।

ওই গ্রামে বন্যার ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করে হুমায়ুন রশিদ নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, কিছু দিন আগে গ্রামের একমাত্র রাস্তাটি ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফের বন্যায় এখন রাস্তাটিতে বিশাল আকারে গর্তের সৃষ্টি হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতো ক্ষয়ক্ষতির পরও কোনো জনপ্রতিনিধি তাদের খোঁজ-খবর নেননি বলেও অভিযোগ করেন রশিদ।

এদিকে জামালগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নই বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন স্বজনদের বাড়িতে। গ্রামের ভেতর এখন চলাচল করতে হয় নৌকা দিয়ে। বন্যার্তদের পাশে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন শুকনো খাবার বিতরণ করলেও, প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল বলে জানান স্থানীয়রা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান জানান, মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত ও অবিরাম বর্ষণে বাংলাদেশে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৫ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক আব্দুল আহাদ জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর মাঝে নগদ আট লাখ টাকা, ৩৪৫ মে. টন চাল, দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার এবং রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button