জাতীয়

হটলাইনে সাড়া নেই, জেলা হাসপাতালে ভর্তির পরই মৃত্যু

করোনা ভাইরাসের মোটামুটি সবগুলো লক্ষণ শ্বাসকষ্ট, জ্বর, পাতলা পায়খানা, গা ব্যথা ও বমিতে আক্রান্ত হয়ে শওকত আলী (২৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
অথচ প্রাণঘাতী এই ভাইরাস তার শরীরে ছিল কিনা তা পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ না করেই দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করার কিছুক্ষণ পর মারা যান শওকত আলী। তিনি নড়াইল পৌরসভার দক্ষিণ নড়াইল এলাকার ওমর আলীর পুত্র।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা অবশ্য বলছেন, “হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে, বিধায় কোনো নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি।”
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তার শরীরে গত এক সপ্তাহ ধরে জ্বর, কাঁশি, শ্বাসকষ্ট, গা ব্যথা দেখা দেয়। এরপর ঢাকায় করোনা সংক্রান্ত হটলাইনে ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়ভাবে ডাক্তার দেখিয়ে অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় মঙ্গলবার রাত পৌনে ৯টার দিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর ১৫ মিনিট পরই তার মৃত্যু ঘটে।
শওকতের মৃত্যুর পর পরই লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং রাতেই তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয়।
নড়াইল সদর হাসপাতালের ডিউটিরত মেডিকেল অফিসার ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, “শওকত শ্বাসকষ্ট ও বমির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়ার কিছুক্ষণ পরে মারা যায়।”
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মশিউর রহমান বাবু বলেন, “তার হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে।”
সদর থানার ওসি মোঃ ইলিয়াছ হোসেন বলেন, “বুধবার সকাল ৯টার দিকে জেলা প্রশাসন এবং থানা পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে লাল পতাকা টানিয়ে বাড়ি লকডাউন করেছে এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাড়ির বাইরে না আসতে মাইকিং করা হয়েছে।”
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুস শাকুর বলেন, “ওই রোগীর করোনা নয়, তার হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে। তবে নমুনা সংগ্রহের ব্যাপারে সিভিল সার্জনকে জানানো হয়েছিল। পরে কি হয়েছে তা জানি না “
নড়াইলের সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল মোমেন বলেন, “ঢাকা আইইডিসিআর এর প্রতিনিধির সাথে রোগীর মৃত্যুর বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে কথা বললে তারা জানিয়েছেন, এ রোগী হার্ট-অ্যাটাকে মারা গিয়েছে। সেজন্য মৃতের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। তবে মৃতের পরিবারকে লকডাউনে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।”
নড়াইলের জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, “সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে। তারপরও ওই এলাকায় বাড়তি সর্তকতামূলক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তিনি করোনা প্রতিরোধে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন।
এদিকে শওকত আলীর মৃত্যুর ঘটনা শহরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় গোটা শহরে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন পেশার মানুষ নানা মন্তব্য করছেন। তার শরীরে করোনাভাইরাস ছিল কিনা তা পরীক্ষা নিরীক্ষা না করায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button